Connect with us

নির্বাচিত

করোনার দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি? এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন

Published

on

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ‘লং কোভিড’ বা ‘দীর্ঘমেয়াদী করোনা’কে সজ্ঞায়িত করেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হওয়ার পরও যদি কিছু শারীরিক সমস্যা থেকে যায় বা নতুন করে দেখা দেয় তাকেই ‘লং কোভিড’ বা ‘দীর্ঘমেয়াদী করোনা’ বলছে ডাব্লিউএইচও। বিজ্ঞানীরা এখনো এসব সমস্যা নিয়ে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত তারা যে বিষয়গুলো জানতে পেরেছে তা নিয়েই আজকের আলোচনা।

দীর্ঘমেয়াদী করোনাকে যেভাবে সজ্ঞায়িত করা হয়েছে
ডাব্লিউএইচও এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রথম তিন মাসের মধ্যে যদি যেকোন একটি লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে এবং এটি অন্তত দুই মাস স্থায়ী হয়, এবং সেটি যদি অন্যান্য রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব না হয় তাহলে তাকে দীর্ঘমেয়াদী করোনা বলে। লক্ষণগুলো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সময়েই শুরু হতে পারে অথবা করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়ার পরও দেখা দিতে পারে।

খুব সাধারণ লক্ষণগুলো হলো-ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, ভুলে যাওয়া। এছাড়াও রয়েছে বুকে ব্যাথা, খাবারের স্বাদ বা কোনোকিছুর গন্ধ না পাওয়া, দুর্বল পেশী ইত্যাদি। দীর্ঘমেয়াদী করোনায় সাধারণত প্রতিদিনের স্বাভাবিক শারীরিক কর্মক্ষমতার ওপর প্রভাব পড়ে।

পরিস্থিতির সঙ্গে ডাব্লিউএইচও এর সংজ্ঞা পরিবর্তিত হতে পারে। যদিও সংস্থাটি বলছে, শিশুদের ক্ষেত্রে এটিকে অন্যভাবেও সজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বা হার কত?
দীর্ঘমেয়াদী করোনা আক্রান্তের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায় নি। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হওয়া ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৩৭ শতাংশের মধ্যে অন্তত একটি দীর্ঘমেয়াদী করোনার লক্ষণ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে অনেককেই এরজন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।

Advertisement

করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ্য হয়েছেন এমন ৫২ হাজার মানুষের ওপর করা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৫ এর কম বয়সী মানুষের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী করোনা হওয়ার হার বেশি। গবেষণায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদের করোনা আক্রান্তের সময় তেমন একটা উপসর্গ ছিল না। অনেকের কোন উপসর্গই ছিল না।

দীর্ঘমেয়াদী করোনা নিয়ে গবেষণায় আরো যা পাওয়া গেছে
ল্যানসেটে প্রকাশিত চীনা বিশেষজ্ঞদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়ার ১২ মাস পরও অনেকে শ্বাসনালীর সমস্যায় ভুগছেন। করোনার সময় মাঝারি অসুস্থ্যতায় ভুগেছেন এমন ২০ থেকে ৩০ শতাংশ এবং অনেক বেশি অসুস্থ্য ছিলেন এমন ৫৪ শতাংশ মানুষ শ্বাসনালীর সমস্যায় ভুগছেন।
হার্ভার্ডের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা করোনায় আক্রান্ত হননি তাদের চেয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এমন মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিস ও নিউরোলজিক্যাল সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।

দীর্ঘমেয়াদী করোনা কি ভালো হয়? কি বলছে গবেষণা
দীর্ঘমেয়াদী করোনার অনেক সমস্যাগুলোই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঠিক হয়ে যায়। তবে কিছু মানুষ এখনো এ সমস্যায় ভুগছেন। ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, ৬৮ শতাংশ মানুষ ছয় মাস ধরে এবং ৪৯ শতাংশ মানুষ ১২ মাস ধরে অন্তত একটি করোনা পরবর্তী সমস্যায় ভুগছেন। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দীর্ঘমেয়াদী এ সমস্যাগুলো সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে।

ভ্যাকসিন কি দীর্ঘমেয়াদী করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে?
একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অনেকেই দীর্ঘমেয়াদী করোনা থেকে অনেকটা সুস্থ্য হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রেভেনশন) বলছে, করোনা থেকে সুস্থ্য হওয়ার পরবর্তী শারীরিক অবস্থায় ভ্যাকসিনের কোন প্রভাব আছে কি না তা জানার জন্য আরো বেশি গবেষণার প্রয়োজন। সূত্র: রয়টার্স

Advertisement
Continue Reading
Advertisement