শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ, জটিলতা ও মৃত্যু কম হলেও তারা কিন্তু পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নয়। আর শিশুদের জন্য মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিনড্রোম নামে এক বিশেষ ধরনের মারাত্মক জটিলতা হতে পারে। এতে শিশুর লিভারসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয় এবং সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তে পারে। এ ছাড়া যেসব শিশু আগে থেকেই অন্যান্য আনুষঙ্গিক অসুস্থতা, যেমন স্থূলতা, ডায়াবেটিস, হাঁপানি বা ফুসফুসের সমস্যা, ক্যানসার, হার্টের জন্মগত ত্রুটি, কিডনির সমস্যা, শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় ঘাটতি ইত্যাদিতে ভুগছে, তাদের করোনা হলে রোগের জটিলতা বা মৃত্যুঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যেতে পারে। এক বছরের কম বয়সী শিশুরাও কিন্তু মারাত্মক ঝুঁকিতে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এখন ডেলটা ধরন সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বেশি। এই ধরনের বিস্তার, আক্রমণের তীব্রতা, ফুসফুসের সংক্রমণের মাত্রা ও জটিলতা আগের ধরনগুলোকে বহুলাংশে ছাড়িয়ে গেছে। শিশুরা যেহেতু এখনো করোনা টিকার আওতার বাইরে, তাই তাদের এ ধরনে সংক্রমণঝুঁকি নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
দেশে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় শিশুদের নিয়ে গাদাগাদি করে মানুষের চলাচল, ভ্রমণ, শপিং মল বা রেস্তোরাঁয় যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে এবং সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে সংক্রমণঝুঁকিও। মনে রাখতে হবে, ডেলটা ধরনের কারণে বড়দের পাশাপাশি ছোটদেরও সব রকম স্বাস্থ্যবিধি, যেমন মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, নিয়মিত বিরতিতে হাত ধোয়া, কনুইয়ের ভাঁজে হাঁচি-কাশি দেওয়া মেনে চলতেই হবে। শিশুদেরও অতি দ্রুত করোনা টিকার আওতায় আনতে হবে। যতই সমুদ্রসৈকত, রিসোর্ট বা শপিংয়ে যেতে ইচ্ছা করুক না কেন, মাথায় রাখতেই হবে, এতে শিশুসহ আপনারা সবাই ডেলটা ধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা, বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল