অপারেশনের সময় আমরা দেখে থাকি চিকিৎসকরা সবুজ পোশাক পড়ে থাকেন। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, এত রং থাকতে কেন সবুজ রঙের পোশাক পরেন চিকিৎসকরা।
গলায় স্টেথোস্কোপ, মাথায় মেডিক্যাল ক্যাপ, নাক-মুখ ঢাকা মাস্কে, হাতে গ্লাভস। সাদা পোশাকের উপর সবুজ রঙের অ্যাপ্রন।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অপারেশন থিয়েটারের ভিতর চিকিৎসকরা সবুজ পোশাকের ব্যবহার করেন। মাথার টুপি, মাস্কের রংও সবুজ হয়। ওটি-র দেওয়াল, রোগীর শয্যায় ব্যবহৃত চাদর সবই সবুজ রঙের।
হয়তো ভাবছেন সবুজ চোখের জন্য উপকারী, তাই? খুব একটা ভুল ভাবেননি আপনি। তবে কেবল চোখের আরামের জন্যই নয়, এই রং বাছার নেপথ্যে রয়েছে আরও কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ।
তবে সবুজ বা নীল রঙের অ্যাপ্রোন আসলেই অস্ত্রোপচার টেবিলে চিকিৎসকদের আরো ভালোভাবে দৃষ্টিপাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ এটি লাল রঙের বিপরীতে অবস্থান করে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সাইকোলজিস্ট জন ওয়ার্নার বলেন, সবুজ রং মূলত দুটি উপায়ে সার্জনদের দৃষ্টিকে সহায়তা করে থাকতে পারে। প্রথমত, সবুজ বা নীল রংয়ের দিকে তাকানোর পরে লাল রং (রক্তের রং লাল, আর অপারেশন থিয়েটার মানেই রক্ত) দেখা চোখের জন্য সহজ হয়। ক্রমাগত একই রংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে নির্দিষ্ট সময় পরে মানুষের চোখ সেই রঙকে ঘোলাটে আকারে দেখতে শুরু করে। কিন্তু মাঝে মাঝে সবুজ বা নীল রংয়ের দিকে তাকালে তা পরবর্তীতে লাল রঙে চোখের ঘোলাদৃষ্টি দূর করতে সহায়ক হয়।
দ্বিতীয়ত, দীর্ঘক্ষণ ধরে লাল বা গোলাপী কিছুর দিকে গভীর দৃষ্টিপাতের পড়ে সাদা রংয়ের দিকে তাকালে দৃষ্টিভ্রম হয়। অস্ত্রোপচার রুমে উজ্জ্বল ফ্লাশলাইট থাকে, যা সাদা রঙের অ্যাপ্রোনের ওপর পড়ে চোখে প্রতিফলিত হতে পারে। আমাদের চোখে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ পড়লে যেমন দৃষ্টিভ্রম হয় ব্যাপারটা ঠিক একইরকম।
অস্ত্রোপচারের সময় সবুজ কিংবা নীল রংয়ের দিকে সার্জন মাঝে মধ্যে তাকালে এ ধরনের দৃষ্টিভ্রম ঘটে না। ফলে আরো সূক্ষ্মভাবে অস্ত্রোপচার করা সহজ হয়। এ কারণেই সবুজ বা নীল রঙের অ্যাপ্রোন অস্ত্রোপচার রুমে চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ উপযোগী।