বিদেশ যাত্রার ২৪ ঘন্টা আগে করোনা নমুনা সংগ্রহ এবং পূর্বে রিপোর্ট ডেলিভারি গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে করোনা শনাক্ত হওয়ায় প্রতিদিন প্রায় ৫৫০ জন প্রবাসী কর্মীকে বিদেশে যাওয়ার ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে। তাদের মধ্যে অন্তত ২০০ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী কর্মী।
আজ শুক্রবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় অনেক প্রবাসী কর্মী ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কর্মস্থলে ফিরে যাওয়া নিয়ে সংশয়ের মধ্যে পড়েছেন।
মাদারীপুরের বাসিন্দা প্রবাসী কর্মী জুম্মান আহমেদ বলেন, আমার ২৬ জানুয়ারি দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ফ্লাইটের ৪৮ ঘণ্টা আগে করোনা পরীক্ষা করতে দিয়েছিলাম। তখন নেগেটিভ এসেছিল। কিন্তু ফ্লাইটের ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসে।
এ কারণে শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হই। এখন তো বুঝতে পারছি না কী করব, বলেন তিনি।
নিয়ম অনুযায়ী, আরব আমিরাতে যেতে হলে যাত্রীর ফ্লাইটের ৬ ঘণ্টা আগের করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রেজাল্ট থাকতে হবে।
আমিরাতগামী আরেক যাত্রী মোহাম্মদ রকিবুল হাসান জানান, ২৫ জানুয়ারি তার বিমানের ফ্লাইটে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইটের ৬ ঘণ্টা আগে ঢাকায় করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রেজাল্ট আসায় তিনি নির্ধারিত তারিখে ফ্লাইট করতে পারেননি।
জুমাদিন ও রাকিবুল দুজনেই জানান, তাদের ভিসার মেয়াদ ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে শেষ হয়ে যাবে এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কর্মস্থলে ফিরতে না পারলে, তারা সমস্যায় পড়বেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাতিল করা ফ্লাইটের সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসগুলো যাত্রীদের টিকিট পরিবর্তন করার এবং প্রায় ২ সপ্তাহ পরের ফ্লাইটে টিকেট বুক দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার ৫০০ যাত্রী বিদেশে যান। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রবাসী কর্মী কর্মস্থলে যোগ দিতে দেশ ছাড়েন।
প্রবাসী কর্মীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, করোনা পজিটিভ হওয়ায় যারা ফ্লাইট বাতিল করেছেন, তাদের বেশিরভাগই কর্মস্থলে যোগদানের তারিখের কাছাকাছি সময় টিকেট করেছিলেন যেন ছুটির সর্বোচ্চ সময় তারা দেশে থাকতে পারেন।
কিন্তু বিদেশ যাওয়ার আগ মুহূর্তে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
তবে ফ্লাইট বাতিল করা প্রবাসীদের অনেকেই জানিয়েছেন যে তাদের করোনার কোনো লক্ষণ নেই।
বিমানবন্দরের চিকিৎসক ডা. শাহরিয়ার জানান, অনেকেই মনে করেন যে তারা করোনা আক্রান্ত হলে তাদের জ্বর, কাশি, সর্দি দেখে দেবে। কিন্তু এখন অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন, যাদের শরীরে কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
ডা. শাহরিয়ার বলেন, ‘বিদেশগামী যাত্রীদের ফ্লাইটের অন্তত ৭ দিন আগে খুব সতর্ক থাকা উচিত। ফ্লাইটের তারিখের ৭ দিন আগে কেনাকাটা বা আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করা যাবে না।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, যদি কোনো বিদেশগামী যাত্রীর করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে, তবে পরের ৭ দিনের মধ্যে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
২০২১ সালের জুনের নির্দেশনা বলা হয়, ৭ দিন পর সরকার পরিচালিত ল্যাবে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রেজাল্ট এলে যাত্রীরা বিদেশে যেতে পারবেন।