Connect with us

নির্বাচিত

স্ট্রোক মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি ও সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন

Published

on

দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগতই বাড়ছে। এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা। সঠিক সচেতনতা এবং সমন্বিত চিকিৎসা কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে এই মৃত্যুঝুকি কমানোর পাশাপাশি রোগি পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠা সম্ভব।

২৫ অক্টোবর বিকেল ৪টায় সাম্প্রতিক দেশকাল সম্মেলন কক্ষে ‘স্ট্রোক প্রতিরোধ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনে সমন্বিত কার্যক্রমের গুরুত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। এই বছরে স্ট্রোক সচেতনতায় প্রতিপাদ্য- ‘মূল্যবান সময় বাঁচানোর গুরুত্ব’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার ২৯ অক্টোবর পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলেন আইএসও সনদপ্রাপ্ত একমাত্র পেইন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কেয়ার প্রতিষ্ঠান ইমপালা পেইন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কেয়ার, টিএমএসএস, পিএইচএফ, বাংলাদেশ স্ট্রোক এসোসিয়েশন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন সাম্প্রতিক দেশকাল-র সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোশিয়েশনের ট্রাস্ট্রি কাউসার মাহমুদ।

বৈঠকে আমন্ত্রিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম. মোজাহেরুল হক, টিএমএমএস-র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. হোসনে-আরা বেগম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শিরাজী শাফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ, বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাস্টি ওসমান গণি, বাংলাদেশ ফিজিক্যাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ কাউন্সিল ফর চাইল্ড ওয়েলফেয়ারের পরিচালক ইয়াসমিন আরা ডলি, অকুপেশনাল থেরাপি বিশেষজ্ঞ উম্মে সায়কা নিলা, সোসাইটি অব স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টস (এসএসএলটি)-এর সভাপতি ফিদা আল শামস, ইমপালা পেইন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন কেয়ারের চীফ অপারেটিং অফিসার সৈয়দ মো. জাকারিয়া ফারুক, বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের ট্রাস্ট্রি আসিফ বিন ইসলাম প্রমূখ।

বাংলাদেশে স্ট্রোকের চিকিৎসার ব্যয় সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. এম মোজাহেরুল হক বলেন, আমাদের চিকিৎসার জন্য আমরা যে টাকা ব্যয় করি তা যদি ৬৩% নিজের পকেট থেকে দেই আর বাকি ৩৭% সরকার দেয়। তার মানে হল It’s a burden for all of us. আমরা এখানে যারা আছি এখানে কারও সামর্থ নাই যে, যা আয় হয় তার ৬৩% ব্যয় করতে হয় শুধু চিকিৎসা করার জন্য। এই কথাটা মনে রেখে আমরা এখন চিন্তা করি স্ট্রোকটা এখানে যারা আছেন বিশেষজ্ঞরা তারা আমার সাথে একমত হবেন যে এটা অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা। ব্যয়বহুল বলার কারণ সরকারি যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে সেটা স্ট্রোকের জন্য অপ্রতুল। কারণ স্ট্রোক ডায়গনসিস হওয়ার পরে পরবর্তী যে বিষয়গুলি আসে সেই জায়গায় আমি ৬৩% ব্যয় যে নিজের পকেট থেকে যায় এটা দেওয়ার সামর্থ না থাকার কারণে অনেকেই কিন্তু সম্পূর্ণ চিকিৎসাটা নিতে পারেনা। এই কারণে তাদের অনেককেই মৃত্যু বরণ করতে হয় অথবা বাকি জীবনের জন্য পরিবার অথবা সমাজের অথবা জাতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।

Advertisement

স্ট্রোক রোগীদের কম্প্রেহেনসিভ কেয়ার সেন্টারের অনিবার্যতা সম্পর্কে অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বলেন, আমার চর্চা, কর্ম অভিজ্ঞতায় সেক্ষেত্রে আমার উপলব্ধি হল প্রথমতই আমাদের উচিৎ প্রিভেন্টিভ এবং প্রি- প্রিভেন্টিভ। অর্থাৎ আমরা আমাদের লাইফ স্টাইল, আমাদের আচরণ, আমাদের সম্পর্ক, তাদের সঙ্গে এমনভাবে থাকা উচিৎ যাতে করে আমাদের মধ্যে কোনো স্ট্রেসটাই কাজ না করে।

সাম্প্রতিক দেশকাল-র সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ বলেন, স্ট্রোক বাংলাদেশে মরণঘাতি একটি রোগ। কিন্তু অন্যান্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে মানুষের কাছে পরিষ্কার ধারণা থাকলেও স্ট্রোক সম্পর্কে সঠিক ধারনা নেই। একই সাথে মানুষ স্ট্রোক হওয়ার পরপরই কোথায় গেলে চিকিৎসা পাবে এবং চিকিৎসা কি হতে পারে সেবিষয়ে বুঝে উঠতে পারেন না। তাই এনিয়ে ব্যাপক প্রচারনা ও সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, দেশে এক বছরে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৫ হাজার ৫০২ জন। যা বেড়ে ২০২০ সালে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৩৬০ জনে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল এর ২০১৮ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রতি হাজারে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন ১১ দশমিক ৩৯ জন মানুষ। প্রায় ২০ লাখ স্ট্রোকের রোগী রয়েছে বাংলাদেশে। স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬০ বছরের বেশি মানুষের মধ্যে ৭ গুণ বেশি। নারীর চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। স্ট্রোকের প্রকোপ শহরের চেয়ে গ্রামে কিছুটা বেশি।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Advertisement
জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন4 weeks ago

ওষুধ খাওয়ার ভুলে অসুস্থতা

জ্বর বা মাথাব্যথা হলেই প্যারাসিটামল, অ্যালার্জির জন্য হিস্টাসিন কিংবা গ্যাসের ট্যাবলেট- এই ধরনের ওষুধগুলো আমরা হরহামেশাই খাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই।...

খাদ্য ও পুষ্টি1 month ago

শিশুদের জন্য লবণ যতটুকু দরকার

অতিরিক্ত লবণ শিশুর বৃদ্ধিতে বাধা প্রদানের পাশাপাশি অল্প বয়সে রক্তচাপের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। খাদ্যাভ্যাসে এমন পরিমাণ লবণ রাখতে হবে যা...

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন1 month ago

ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কেন

বয়সে টিংকু বেশ ছোট। এত ছোট যে মাঝেমধ্যে টিংকুর দাঁত পড়ে। একবার বিড়াল টিংকুকে আঁচড়ে দিল। চিকিৎসক বললেন যে র‌্যাবিসের...

Advertisement