Connect with us

স্বাস্থ্য সংবাদ

প্রতি বছর ৮৮ লাখ লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগে ও প্রচেষ্টায় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি আশাব্যাঞ্জক হলেও এখনো এমডিআর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।   স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশে ১৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী মানুষই যক্ষ্মায় বেশি আক্রান্ত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে বলা হয়েছে, যক্ষ্মা উন্নয়নশীল বাংলাদেশের অন্যতম জনস্বাস্থ্য […]

Published

on

প্রতি বছর ৮৮ লাখ লোক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছেনিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগে ও প্রচেষ্টায় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি আশাব্যাঞ্জক হলেও এখনো এমডিআর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়ে গেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশে ১৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী মানুষই যক্ষ্মায় বেশি আক্রান্ত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে বলা হয়েছে, যক্ষ্মা উন্নয়নশীল বাংলাদেশের অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা এবং দ্বিতীয় ঘাতক ব্যাধি। বিশ্বের যক্ষ্মাক্রান্ত ভয়াবহ ২২টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ।

 

 

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যক্ষ্মা নিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব সচেতন হলেও এখনো বিশ্বে প্রতি বছর ৮.৮ মিলিয়নের (৮৮ লাখ) বেশি লোক এই যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে ১.৪ মিলিয়ন লোক প্রতি বছর মারা যাচ্ছে। আর বিশ্বে মোট ৪০ ভাগ যক্ষ্মা রোগী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বসবাস করে।

Advertisement

শুত্রুবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস’ উপলক্ষে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তরা এসব তথ্য দেন।

ব্র্যাকের সহযোগী ডিরেক্টর আকরামুল ইসলামে সঞ্চালনা সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রামের ডেপুটি ম্যানেজার মির্জা নিজাম উদ্দিন, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উপ-পরিচালক ডা. আশেক হোসেন, নগর ভবনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লুৎফর হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৫০ ভাগই যক্ষ্মায় জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত। বিশ্বের ২২ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে। আমাদের দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা প্রতি লাখে ৩৮৭ জন।”

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রামের ডেপুটি ম্যানেজার মির্জা নিজাম উদ্দিন বলেন, “যক্ষ্মা আক্রান্তদের অর্ধেকই সংক্রামক রোগী, যারা প্রতিনিয়ত যক্ষ্মা জীবাণু ছড়িয়ে অন্যদের সংক্রমিত করে। চিকিৎসার আওতাভুক্ত নয় এমন প্রত্যেক সংক্রামক রোগী থেকে বছরে ১০ থেকে ১৫ জন সুস্থ মানুষের শরীরে যক্ষ্মা জীবাণু প্রবেশ করে।”

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উপ-পরিচালক ডা. আশেক হোসেন বলেন, “এমডিআর টিবি রোগীদের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান এখনো আমাদের দেশে নেই। তবে, সারা দেশে প্রায় ১০ হাজার এমডিআর টিবি রোগী রয়েছে। ইতিমধ্যেই এ রোগীর সঠিক সংখ্যা নির্ণয়ে একটি জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।” 

Advertisement

বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশে গত এক দশকে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কমতির দিকে রয়েছে। বাংলাদেশে প্রকৃত যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কত তা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পরিসংখ্যানে ভিন্নতা থাকলেও একটি বিষয়ে সবাই একমত যে, গত এক দশকে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়েনি।”

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সমন্বয়ক আকরামুল ইসলাম বলেন, “দারিদ্র এবং যক্ষার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।”

তিনি জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। দরিদ্রদের মধ্যে যক্ষ্মার প্রবণতার মূল কারণ হলো তাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।

এছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যক্ষ্মার বিস্তারও দ্রুত হয় বলে তিনি জানান।

আশার কথা শুনিয়ে তারা বলেন, “বাংলাদেশ এক সময় যক্ষ্মা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর রোগ হিসেবে চিহ্নিত হলেও এখন নানা ধরনের ওষুধ সহজলভ্য হওয়ায় ছয় মাসের মধ্যেই এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।”

Advertisement

তবে চিকিৎসা সহজলভ্য হলেও যক্ষ্মা নিয়ে যে সামাজিক উদ্বেগ সেটি এখনো আগের মতোই রয়েছে। অনেকের মধ্যে ধারণা আছে যক্ষ্মা হলে তার সঙ্গে কেউ মিশবে না।”

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের উপ-পরিচালক ডা. আশেক হোসেন বলেন, “যক্ষ্রা রোগ মোকাবেলার জন্য গত তিন দশক ধরে সরকারেরও নানা কর্মসূচি ছিল চোখে পড়ার মতো। ৯২ ভাগ যক্ষ্রা রোগী চিকিৎসার মাধ্যমে সেরে ওঠেন। বাকি আট ভাগ রোগী সুস্থ হচ্ছে না।”

তিনি বলেন, যক্ষ্মায় আক্রান্তদের মধ্যে সাত ভাগ  রোগীকে প্রাথমিক পর্যায়ে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যক্ষ্মা নিয়ে সচেতনতা এখন অনেক বাড়লেও শতভাগ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনার পাশাপাশি সচেতনতা আরো বাড়লে বাংলাদেশ থেকে এ রোগ বিদায় নেবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দেন।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement