Connect with us

প্রধান খবর

রাজধানীর ৯৭ শতাংশ হাসপাতাল ঝুঁকিপূর্ণ

Published

on

অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি শুধু পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকা বা নতুন ঢাকার বহুতল ভবনগুলো নয়। ঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীর হাসপাতাল, শপিং কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে প্রায় ৯৫ ভাগ স্থাপনা। রাষ্ট্রের অগ্নিনির্বাপক সংস্থা ফায়ার সার্ভিস সম্প্রতি এসব তথ্য দিয়েছে।

ঢাকা মহানগরের ৯৭ শতাংশের বেশি হাসপাতাল-ক্লিনিকে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধের ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। সেবাদানকারী এসব প্রতিষ্ঠানের অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণব্যবস্থা কয়েকটি অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অনেক যন্ত্রের আবার মেয়াদও নেই। যন্ত্রের ব্যবহারও জানেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

রাজধানীর ৪৩৩টি হাসপাতালের মধ্যে ৪২২টিই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে। এর মধ্যে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে ১৭৩টি এবং সাধারণ ঝুঁকিতে আছে ২৪৯টি হাসপাতাল। সে হিসাবে ঢাকা শহরের শতকরা ৯৭.৫ ভাগ হাসপাতালই অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের একটি সূত্র।

পর পর ঘটে যাওয়া কয়েকটি অগ্নিকান্ডের পর ফায়ার সার্ভিসও ব্যাপক তৎপর হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে রাজধানীর এসব হাসপাতাল ভবনের ধারণক্ষমতা, বেজমেন্ট আছে কি না, সাধারণ সিঁড়ির সংখ্যা ও প্রশস্ততা, জরুরি নির্গমণ সিঁড়ির সংখ্যা, লিফটের সংখ্যা, জেনারেটর রুম, ট্রান্সফর্মার রুম, সুইচ গিয়ার রুম, পাম্প রুম, ফায়ার কন্ট্রোল রুম আছে কি না, প্রতি তলায় স্মোক/হিট ডিটেক্টর আছে কি না ইত্যাদি বিষয়ের ওপর সার্ভে করেই ফায়ার সার্ভিস এই তালিকা চূড়ান্ত করেছে।

তাদের তালিকায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে যেসব হাসপাতালের নাম রয়েছে, সেগুলো হলো- জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, জাতীয় ক্যান্সার ইন্সটিটিউট হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ইএনটি, মেট্রোপলিটন মেডিকেল সেন্টার, হাইটেক মর্ডান সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল, এস.পি.আর.সি অ্যান্ড নিউরোলজি হাসপাতাল,

Advertisement

ফার্মগেটের আল-রাজী হাসপাতাল, ব্রেইন এন্ড লাইফ কেয়ার হাসপাতাল, তেজগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিপিএইচডি জেনারেল হাসপাতাল, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, গুলশানের প্রত্যয় মেডিকেল ক্লিনিক, প্রমিসেস মেডিকেল লিমিটেড, গুলশান মা ও শিশু ক্লিনিক, আর এ হাসপাতাল ও বাড্ডা জেনারেল হাসপাতাল৷

সাধারণ ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার মধ্যে আছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, বারডেম হাসপাতাল, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মাতৃসদন হাসপাতাল,

আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, মনোয়ারা হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড, আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ, ল্যাবএইড হাসপাতাল, পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টার, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মেরিস্টোপ বাংলাদেশ, ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল, হলি ক্রিসেন্ট হসপিটাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক কমপ্লেক্স, সিকদার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সরকারি ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ধানমন্ডি জেনারেল অ্যান্ড কিডনি হাসপাতাল, ধানমন্ডি কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট, বিএসওএইচ হাসপাতাল, প্যানোরমা হসপিটাল লিমিটেড ও ধানমন্ডি মেডি এইড জেনারেল হাসপাতাল লিমিটেড৷

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইন্টেনেন্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে দুই দফা ঢাকাসহ সারাদেশের হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হাসপাতালগুলোর একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এখন পর্যন্ত তাদের তিন দফা নোটিশ ও স্মরণিকা দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে, কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।

বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিক সমিতির মহাসচিব ও শমরিতা হাসপাতালের মালিক ডা. এবিএম হারুন বলেন, ‘হাসপাতালগুলো বড় ধরণের অগ্নিঝুঁকির মধ্যে আছে। তবে যেসব বেসরকারি হাসপাতাল ভবন হাসপাতাল হিসেবেই তৈরি হয়েছে তাদের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলনামূলক ভালো।

Advertisement

তবে যেসব হাসপাতাল পরে আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবনে করা হয়েছে বা ভাড়া করা ভবনে করা হয়েছে সেগুলোর অবস্থা ভালো নয়। সরকারের কাছ থেকে আমাদের কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো ফলো করে এখন সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি উন্নয়নের চেষ্টা করছি।’

Continue Reading
Advertisement