প্রধান খবর
ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া স্থগিত করার দাবি ক্যাবের

দেশে গত ছয় মাসে অর্ধশতাধিক ওষুধের দাম সর্বনিম্ন ১৩ থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কনজ্যুমার এসোসিয়েশন (ক্যাব)।
ক্যাবের তথ্যমতে, গত ২০ জুলাই ৫৩টি ওষুধের দাম পুনঃনির্ধারণ করে সরকার। প্যারাসিটামল, মেট্রোনিডাজল, এমোক্সিলিন, ডায়াজিপাম, ফেনোবারবিটাল, এসপিরিন, ফেনোক্সিমিথাইল পেনিসিলিনসহ অন্যান্য জেনেরিকের ওষুধ রয়েছে এর মধ্যে। গত ছয় মাসে এসব ওষুধের দাম ১৩ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধের দাম বেড়েছে ১৩ থেকে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত।
বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব ওষুধের দাম বৃদ্ধির এই চিত্র তুলে ধরেন। এ সময় ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান ওষুধের দাম বৃদ্ধিকে ‘অযৌক্তিক ও অন্যায়’ বলে মত দেন।
তিনি বলেন, গত দুই-তিন বছরে মানুষের আয় বাড়েনি। এ অবস্থায় ওষুধ কোম্পানিগুলোর ‘অতি লোভের’ কারণে দাম বাড়ানো হচ্ছে ভোক্তার অধিকার উপেক্ষা করে। জীবনমান নিম্নমুখী, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। ওষুধ কেনার সামর্থ্য অনেকে হারাচ্ছেন। অতি মুনাফা করার যে লোভ তা মূল্যস্ফীতিকে আরো চাঙ্গা করে দিয়েছে।
ক্যাব সভাপতি ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে ‘যুক্তিসঙ্গতভাবে’ ওষুধের মূল্য নির্ধারণের সুপারিশ করেন।
তিনি বলেন, সরকারি সংস্থা হিসেবে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তারা যখন ব্যর্থ হয়, তখন আমরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। তারা যেন যুক্তিসঙ্গতভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করেন এবং ওষুধ যেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে।
ওষুধের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্যাব সভাপতি বলেন, কোনো ওষুধ কোম্পানি কি এখন লোকসানে চলছে? যদি তা না হয় তা হলে এই সময়ে দাম বাড়ানো কি যুক্তিসঙ্গত হয়েছে? এই দাম বাড়ানো সময়োপযোগী ও যুক্তিসঙ্গত কি না, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তা বিবেচনা করা উচিত।
ক্যাব সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ ও কাঁচামাল আমদানিতে মার্ক-আপ কমিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা ও স্যালাইন তৈরি-বাজারজাতকরণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করাসহ ৪ দফা সুপারিশ করে।
ক্যাবের সুপারিশে বলা হয়, আইভিফ্লুয়িড জাতীয় ওষুধের দাম বৃদ্ধি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এমন একতরফাভাবে যখন তখন, যত খুশি তত বেশি মূল্যবৃদ্ধি করা ভোক্তা অধিকার ও স্বার্থের পরিপন্থী। সুতরাং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে অনতিবিলম্বে বৃদ্ধি করা ওষধের মূল্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত কমিটি দ্বারা রিভিউ করতে হবে। উক্ত রিভিউ না হওয়া পর্যন্ত আইভি ফ্লুইড জাতীয় ওষুধসহ অন্যান্য ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া স্থগিত করারও দাবি করা হয়।
ক্যাবের সুপারিশে বলা হয়, ১৯৯৪ সালের কালো আদেশটি বাতিল করতে হবে। ওই আদেশের কারণে কোম্পানিগুলো যখন তখন ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। ওষুধের কাঁচামাল এবং অন্যান্য ওষুধ আমদানিতে মার্ক-আপ কমিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
এ ছাড়া সুপারিশে বলা হয়, সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে ওষুধের দামবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। স্যালাইন তৈরি ও বাজারজাতকরণ সরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বা আইপিএইচ এর মাধ্যমে করতে হবে।