Connect with us

খাদ্য ও পুষ্টি

দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে স্বাস্থ্যকর ডায়েট

Published

on

মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের অন্যতম একটি হচ্ছে চোখ। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চোখের দৃষ্টিশক্তি দ্রুত কমতে থাকে। আমরা অনেকেই আছি, যারা চোখ থাকতে চোখের মর্ম বুঝি না, চোখের স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিই না। এ কারণে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চোখের নানা সমস্যায় ভুগতে থাকি, ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলি দৃষ্টিশক্তি। তাই চোখ থাকতে এর গুরুত্ব বোঝা দরকার

প্রায় দুই দশক ধরে পরিচালিত একটি গবেষণার অনুসন্ধানে সম্প্রতি অস্বাস্থ্যকর ডায়েটের সঙ্গে বৃদ্ধ বয়সে দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে। গবেষণায় বলা হচ্ছে, লাল মাংস, যেকোনো ভাজা খাবার, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস, মিহি শস্যযুক্ত খাবার হার্টের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি এসব খাবার ক্যান্সারের বিকাশ ঘটায়। দৃষ্টিশক্তির ওপর খাদ্যতালিকার প্রভাবের বিষয়টিকে অনেকেই গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন না বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। ব্রিটিশ জার্নাল অব অপথালমোলজি-তে প্রকাশিত নতুন এ গবেষণায় এজ রিলেটেড ম্যাকিউলার ডিজেনারেশনের (এএমডি) সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকার সম্পর্ক আছে বলে বলা হয়েছে। এএমডি চোখের একটি রোগ। এ রোগের কারণে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। এজ রিলেটেড বলার কারণ এ রোগ বয়োবৃদ্ধ মানুষদের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। চোখের একটি অংশ ম্যাকিউলারের ওপর প্রভাব ফেলে বলে ম্যাকিউলার শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এএমডি রোগের কারণে ৫০ বা এর বেশি বয়সের মানুষদের দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেয়ে থাকে। এ রোগ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রেটিনায় প্রভাব ফেলে। এতে ধীরে ধীরে চোখে ঝাপসা দেখা শুরু হয়। যার ফলে মানুষ পড়া কিংবা গাড়ি চালানোর মতো সাধারণ কাজগুলো করতে পারে না।

৬৬ ধরনের খাবারের ওপর ভিত্তি করে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়। অনুসন্ধানে গবেষকরা দুই ধরনের ডায়েট শনাক্ত করেছেন—একটি স্বাস্থ্যকর, অন্যটি ওয়েস্টার্ন। মূলত ওয়েস্টার্ন ধরনের ডায়েট চার্টে লাল মাংস, ভাজা খাবার, মিষ্টি, ড্রিংকস, শস্য, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার, মিষ্টিযুক্ত পানীয় রয়েছে। গবেষণায় যারা আগে স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্ট মেনে চলেছেন, তাদের সঙ্গে এ রোগের কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। কিন্তু যাদের ওয়েস্টার্ন টাইপ ডায়েট চার্ট ছিল, তাদের এএমডি হওয়ার ঘটনা তিন গুণ বেশি ছিল। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো এ রোগ প্রতিরোধের উপায় কী? প্রতিরোধের আগে অবশ্যই রোগের লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগের কোনো লক্ষণ বোঝা যায় না। অনেক সময় মানুষ দেরিতেও বুঝতে পারে না। যদিও বা পারে তখন চোখের অবস্থা সংকটাপূর্ণ থাকে, যার চিকিৎসা হয়ে পড়ে ব্যয়বহুল। শেষ পর্যায়ে এএমডির দুটি ফর্ম দেখা যায়—একটি ওয়েট এএমডি অথবা নিওভাসকুলার এএমডি। এটি হলে পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মীরা ইনজেকশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করেন। অন্যটি হলো ড্রাই এএমডি, যাকে জিওগ্রাফিক অ্যাট্রোফি বলা হয়। নিওভাসকুলারাইজেশন ব্যতীত যখন ফটোরিসিপ্টর সেল মারা যায়, তখন এটা দেখা দেয়। জিওগ্রাফিক অ্যাট্রোফির জন্য কার্যকর কোনো চিকিৎসা নেই। এ গবেষণার মূল উদ্দেশ্যই ছিল এএমডি সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা। খাদ্যতালিকা দৃষ্টিশক্তির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝানো। বয়সকালে এএমডি থেকে মুক্তি পেতে তাই সবারই স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা মেনে চলা উচিত। যেগুলো খেলে এ রোগের ঝুঁকি থাকে, সেসব খাবার পরিহার করতে হবে। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ছোট মাছ, সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে।

Continue Reading
Advertisement