আজ (২৮ মে) পিরিয়ড সচেতনতা দিবস বা ওয়ার্ল্ড মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন ডে। ২০১৪ সাল থেকে দিবসটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বে প্রায় ২শ ৪০ কোটি নারী ও তরুণী স্বাভাবিক এ প্রজনন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেলেও, এখনও এ নিয়ে তৈরি হয়নি সচেতনতা।
গবেষণায় দেখা গেছে, বয়ঃসন্ধিকালে পা দেওয়া কিশোরীদের ৪১ শতাংশই প্রথম মাসিকের সময় বিদ্যালয়ে যায় না। বয়ঃসন্ধিকালের আগে ৬৪ শতাংশ কিশোরীই মাসিকের বিষয়ে সচেতন নয়। ৭ ঘণ্টা স্কুলে থাকলেও ৮৬ শতাংশ কিশোরী স্কুলে গিয়ে ক্লাস করার পুরো সময় প্যাড পাল্টায় না।
যদিও ২০১৫ সালের ২৩ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। সেখানে ছাত্রীদের জন্য পৃথক টয়লেটে নিরাপদ পানি, সাবান, ঢাকনাযুক্ত বিন রাখতে বলা হয়। পাশাপাশি স্কুলে স্যানিটারি প্যাড রাখতে বলা হয়। স্কুলপর্যায়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে মাসিক নিয়ে কথা বলার জন্য একজন শিক্ষিকাকে নির্দিষ্ট করে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী মাসিকের সময় গড়ে ১০ শতাংশ স্কুলছাত্রী স্যানিটারি প্যাড কিংবা স্বাস্থ্যসম্মত উপকরণ ব্যবহার করে। অন্যরা পুরোনো কাপড় বা অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে, যা অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ নয়।
উল্লেখ্য, পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব। নারীদেহের খুবই স্বাভাবিক এক প্রক্রিয়া। পরিসংখ্যান বলছে, একজন নারীর জীবনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার দিন পিরিয়ড থাকে।
জাতিসংঘের সদস্য সংগঠন ‘ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন কোলাবোরেশন কাউন্সিল’ বলছে, বিশ্বে ২৪০ কোটি নারী ও তরুণী ঋতুবতী। যার মধ্যে ৬৫ কোটি নারী ও তরুনী দক্ষিণ এশিয়ার। বলা হচ্ছে বাংলাদেশে ৯০ ভাগ কিশোরী পিরিয়ড সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে, পরিবারের নারী সদস্যদের কাছ থেকে। এছাড়া, বিষয়টিকে এখনও লজ্জা ও গোপনীয় মনে করা হয়।
আইসিডিডিআরবি’র হিসাবে, গ্রামাঞ্চলে প্রতি চার জনে একজন, আর শহরে প্রতি ৫ জনের একজন কিশোরী, পিরিয়ডের সময় স্কুলে যায় না। গবেষণা বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার পানি, স্বাস্থ্য সম্মত ও ঋতুস্রাব বান্ধব শৌচাগার না থাকাই এর মূল কারণ। এছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার তিনভাগের একভাগ কিশোরীও, পিরিয়ডের সময় স্কুল বাদ দেয়।
তবে, পিরিয়ডের ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে আছে, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। দেশে সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমে প্রচার ও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্তির পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।