প্রধান খবর
ধূমপান–দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে সিওপিডি মহামারি ঠেকানো অসম্ভব : বিএমইউ ভিসি
বাংলাদেশে সিওপিডি দ্রুত বাড়ছে এবং ধূমপান, বায়ুদূষণ ও ইনডোর স্মোক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে এ রোগ আগামী বছরগুলোতে মহামারির আকার নিতে পারে— এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।
তিনি বলেছেন, সিওপিডিকে রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকার না দিলে শনাক্তকরণ থেকে চিকিৎসা— সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়বে দেশ।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিশ্ব সিওপিডি দিবস উপলক্ষে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত জনসচেতনতামূলক র্যালি শেষে গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক শাহিনুল আলম বলেন, সিওপিডি এখন বাংলাদেশের গভীর জনস্বাস্থ্য সংকট। ধূমপান, বায়ুদূষণ, ইনডোর স্মোক— এই তিনটিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সিওপিডির গতি থামবে না।
তিনি জানান, দেশে রোগ শনাক্তকরণে দেরি, কমিউনিটি স্ক্রিনিংয়ের অভাব এবং আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার সীমাবদ্ধতা সমস্যাকে আরও জটিল করছে।
তিনি আরও বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও নীতিনির্ধারণে স্পষ্ট অগ্রাধিকার দরকার। গবেষণা তখনই অর্থবহ, যখন তা জনগণের কাজে লাগে। অনেক সময় অল্প ব্যয়ের গবেষণার ফলাফলই মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলে।
বিএমইউ আগামীতে রেসিডেন্সি ট্রেনিং, পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন কেন্দ্র এবং জাতীয় ডিজিজ রেজিস্ট্রি তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
গোলটেবিল আলোচনায় চেস্ট অ্যান্ড হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে কাজ করার ক্ষেত্র এখনও বিশাল। সমন্বিত উদ্যোগ নিলে দেশের সিওপিডি বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ধূমপান পরিত্যাগ, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রামে চুলার ধোঁয়া কমানোর ব্যবস্থা ছাড়া সিওপিডি মোকাবিলা কঠিন। রোগীরা যাতে গাইডলাইনভিত্তিক চিকিৎসা পান— সেই নিশ্চয়তা এখনই জরুরি।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করা এবং পরিবেশ দূষণ রোধ করা জরুরি। গবেষণা কার্যক্রম ধীরে ধীরে আরও বিস্তৃত করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
রেসপিরেটরি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ বলেন, সিওপিডি প্রতিরোধযোগ্য। যৌথ উদ্যোগ নিলে আমরা রোগের বোঝা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারব।
তিনি জানান, আজকের আলোচনার সুপারিশগুলো আগামী বছরের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মপরিকল্পনায় যুক্ত করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ। সঞ্চালনা করেন ডা. মানাল মিজানুর রহমান। কোরআন তেলাওয়াত করেন ডা. কবিরুল ইসলাম।
