Connect with us

প্রধান খবর

ওষুধের ওপর ট্রাম্পের ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, বিরাট ক্ষতির আশঙ্কায় ভারত

Published

on

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে তাঁর দেশে ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। ভারতের ওষুধশিল্প মার্কিন বাজারের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। তাই এ সিদ্ধান্তের কারণে দেশটির ওষুধ খাত ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে।

ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে আমরা যেকোনো ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব; যদি না কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ওষুধ উৎপাদনের কারখানা তৈরি করছে।’

ট্রাম্পের পোস্টগুলো দেখাচ্ছে, তিনি শুল্কের ব্যাপারে শুধু আগস্টে চালু হওয়া নতুন বাণিজ্য নীতি বা আমদানি করেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না। তিনি আরও শুল্ক আরোপ করতে চাইছেন এবং একে বিস্তৃত পরিসরে ব্যবহার শুরু করেছেন। তিনি মনে করেন, করগুলো তাঁর দেশের সরকারের বাজেট ঘাটতি কমাতে এবং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

ট্রাম্প আরও বলেছেন, ‘রখানা “করছে” বলতে বোঝানো হবে, “জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে” অথবা “নির্মাণ শুরু হয়েছে”। (যুক্তরাষ্ট্রে) যদি (অন্য দেশের) কোনো কারখানার কাজ শুরু হয়ে থাকে, তবে তার ওষুধে শুল্ক আরোপ করা হবে না। এ বিষয়ে আপনার মনোযোগের জন্য ধন্যবাদ।’

ট্রাম্পের পোস্টগুলো দেখাচ্ছে, তিনি শুল্কের ব্যাপারে শুধু আগস্টে চালু হওয়া নতুন বাণিজ্য নীতি বা আমদানি করেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না। তিনি আরও শুল্ক আরোপ করতে চাইছেন এবং একে বিস্তৃত পরিসরে ব্যবহার শুরু করেছেন। তিনি মনে করেন, করগুলো তাঁর দেশের সরকারের বাজেট ঘাটতি কমাতে এবং দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

সর্বশেষ শুল্ক ব্যবস্থায় ট্রাম্প রান্নাঘরের কেবিনেট ও বাথরুম ভ্যানিটির ওপর ৫০ শতাংশ, আসবাবপত্রের ওপর ৩০ শতাংশ ও ভারী ট্রাকের (বেশি ওজনের পণ্যবাহী ট্রাক) ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।

Advertisement

যদিও ট্রাম্প নতুন শুল্ক আরোপের আইনি ব্যাখ্যা দেননি, তবু তিনি বলেছেন, করগুলো ‘(মার্কিন) জাতির নিরাপত্তা ও অন্যান্য কারণে’ জরুরি। শুল্ক বা করের মতো বিষয় সাধারণত মার্কিন কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই মনে হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প নিজের ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন।

ভারত কীভাবে প্রভাবিত হতে পারে
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওষুধ রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার। ২০২৪ অর্থবছরে ভারতের ২৭.৯ বিলিয়ন (২,৭৯০ কোটি) ডলার মূল্যের ওষুধ রপ্তানির মধ্যে ৩১ শতাংশ বা ৮.৭ বিলিয়ন (৮৭০ কোটি ডলার বা ৭৭,১৩৮ কোটি রুপি) ডলারের ওষুধ যুক্তরাষ্ট্রে গেছে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে আরও ৩.৭ বিলিয়ন (৩৭০ কোটি ডলার বা ৩২,৫০৫ কোটি রুপি) ডলারের ওষুধ রপ্তানি করা হয়েছে।

২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে আমরা যেকোনো ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব; যদি না কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ওষুধ উৎপাদনের কারখানা তৈরি করছে।
—ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত জেনেরিক ওষুধের ৪৫ শতাংশের বেশি ও বায়োসিমিলার ওষুধের ১৫ শতাংশ ভারত সরবরাহ করে। ড. রেড্ডিজ, অরবিন্দ ফার্মা, জাইডাস লাইফসায়েন্সেস, সান ফার্মা ও গ্ল্যান্ড ফার্মার মতো প্রতিষ্ঠান তাদের মোট আয়ের ৩০–৫০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাজার থেকে অর্জন করে।

যদিও ট্রাম্প নতুন শুল্ক আরোপের আইনি ব্যাখ্যা দেননি, তবু তিনি বলেছেন, করগুলো ‘(মার্কিন) জাতির নিরাপত্তা ও অন্যান্য কারণে’ জরুরি। শুল্ক বা করের মতো বিষয় সাধারণত মার্কিন কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই মনে হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প নিজের ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন।

ট্রাম্পের নতুন শুল্ক মূলত ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধকে নিশানা করছে, যেখানে বড় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিপত্য রয়েছে। কিন্তু ভারত থেকে আসা জটিল জেনেরিক ও বিশেষ ওষুধও কি এ শুল্কের আওতায় পড়বে, তা অজানাই রয়ে গেছে। বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে।

Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা ভারতের তৈরি সস্তা জেনেরিক ওষুধের ওপর নির্ভরশীল। শুল্ক বাড়লে ওষুধের দাম বাড়বে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং ওষুধের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কম মুনাফায় কাজ করছে, তাই শুল্ক আরোপ হলে তারা খরচ সামলাতে পারবে না এবং শেষ পর্যন্ত তা মার্কিন ভোক্তা বা বিমা প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপিয়ে দেবে।

ট্রাম্প ইতিমধ্যে ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ ‘দণ্ড’ আছে রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায়।

Continue Reading
Advertisement