অন্ধত্বের ঝুঁকিতে দেশের ১৯ লাখ ৪৬ হাজার মানুষ। তাদের ৮০ ভাগেরই কোনো লক্ষণ নেই। গ্লুকোমা সোসাইটির গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, সময়মতো চিকিৎসা না করলে এ সব রোগী হারাবে দৃষ্টিশক্তি।
গ্লুকোমা হলে চোখের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধীরে ধীরে দৃষ্টি কমে যায়। এক সময় অন্ধ হয়ে যায় রোগী। দেশে গ্লুকোমার প্রকোপ জানতে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ১২ হাজার মানুষের ওপর জরিপ করেছে বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটি। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তুলে ধরা হয় ফলাফল। এতে দেখা যায়, ১৯ লাখ ৪৬ হাজার মানুষ গ্লুকোমায় আক্রান্ত। আর মৃদু লক্ষণ বা কারণ আছে ৫৯ লাখ মানুষের।
প্রধান গবেষক অধ্যাপক শেখ এম এ মান্নাফ বলেন, ‘গ্লুকোমা রোগী যারা তারা যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না নেয়, ওষুধ না দেয় এবং প্রয়োজন মতো অপারেশন না করায়, তাহলে তারা অন্ধত্ব বরণ করবেই।’
বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘চোখে ছানি পড়লে ছানি অপরারেশন করলে আবার দেখতে পাবেন, রেটিনারও অনেক রোগ আছে যেগুলোর চিকিৎসা করলে রোগী আবার দেখতে পায়, কিন্তু গ্লুকোমা হয়ে যদি অন্ধ হয় এটা আর কখনও ভালো হয় না। এটা একবারে হঠাৎ করে হয় না। আস্তে আস্তে হয়। মানুষ প্রথমে বুঝতে পারে না।’
দেশে গ্লুকোমা রোগী বাড়ছে। মাত্র ১৬ ভাগের ক্ষেত্রে হালকা চোখে ব্যথা দেখা দেয়। বেশিরভাগের লক্ষণ না থাকায় বয়স ৩৫ পার হলে বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
অন্ধত্বের কারণ কী? করণীয় কী হতে পারে?অন্ধত্বের কারণ কী? করণীয় কী হতে পারে?
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমি নিজেও চোখের অপারেশন করিয়েছি। সুতরাং আমি জানি, আমাকেও মাঝেমাঝে চোখ দেখাইতে হয়। সুতরাং মাঝেমাঝে চিকিৎসকদের চোখ দেখানো এই সচেতনতা যদি আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি, তাহলে আমার মনে হয় যে এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাব।’
বাংলাদেশে অন্ধত্বের দ্বিতীয় কারণ গ্লুকোমা। এর বড় কারণ এখনও অজ্ঞাত। তবে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ গ্রহণ অথবা পারিবারিক কারণেও হতে পারে গ্লুকোমা।