Connect with us

প্রধান খবর

দেশে প্রতিদিন জন্ম হয় ২০ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর

Published

on

দেশে প্রতিবছর জন্ম নিচ্ছে সাড়ে ৭ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু। এই হিসেবে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে ২০ জনেরও অধিক শিশু। এসব শিশুকে বাঁচিয়ে রাখতে তাদের নিয়মিত রক্ত নিতে হয়। আক্রান্ত রোগীর শরীরে লোহিত রক্তকণিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না এবং দ্রুত রক্তের সেল ভেঙে যায়। ফলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।

সাধারণত জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে শিশুদের মারাত্মক থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতনতা বাড়িয়ে প্রতিরোধই এ রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র পথ।

থ্যালাসেমিয়া নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব থ্যালাসেমিয়া’ এর তথ্য মতে, দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের জিন বাহক। এর মধ্যে চার শতাংশ লোক থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। বেঁচে থাকার জন্য যাদের নিয়মিত রক্ত নিতে হয়।

বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া একটি নিরব মহামারি রোগ। এটি একটি বংশগত রক্ত রোগ। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর শরীরে রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের বেঁচে থাকার জন্য প্রতি মাসে ১-২ ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করতে হয়। চিকিত্সা না করা হলে থ্যালাসেমিয়া রোগী ১০-১৫ বছরের মধ্যে মারা যায় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, মা-বাবা দুই জনেই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে সন্তান থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মায়। আর বাবা অথবা মা যে কোনো একজন জিন বাহক হলে ঝুঁকি থাকে না। তাই বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে নেওয়া জরুরি। তবে সংশ্লিষ্টরা বলেন, আরো কার্যকর হবে, যদি স্কুল বয়স থেকেই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বাহক শনাক্ত করা যায়। দুই জন বাহক যদি বিবাহ না করেন, দুই জন বাহক সন্তান নেওয়া থেকে বিরত থাকেন, তাহলেই থ্যালাসেমিয়া ঠেকানো সম্ভব। স্কুল বয়স থেকে প্রক্রিয়াটি শুরু যতটা সহজ। প্রাপ্ত বয়সে ততটা সহজ নয়।

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন। বিশ্বে প্রতি বছর ১ লাখ শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উত্পাদনে ত্রুটি থাকে। অর্থাত্ ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন জিনের কারণে এ রোগ হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা বা এনিমিয়াতে ভুগে থাকেন।

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া হাসপাতালের উপদেষ্টা সৈয়দ দিদার বক্স বলেন, এটা এমন একটা রোগ, যার চিকিত্সায় রক্ত ছাড়া রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা যায় না। ফলে এই রোগের চিকিত্সায় আমরা দেশের ২৪/২৫টা পয়েন্ট থেকে রক্ত সংগ্রহ করি। এ ব্যাপারে আগে আমরা জনসচেতনতা তৈরি এবং পরে রক্ত সংগ্রহ করে থাকি। এ কাজে আমাদের একদল তরুণ সহযোগিতা করে থাকে।

তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে বিয়ের আগে রক্তপরীক্ষার ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৭ লাখ বিয়ে হয়। বিয়ের আগে বাধ্যতামূলক রক্ত পরীক্ষা করা হলে ঝুঁকিপূর্ণ দম্পতি নির্ণয় করা সম্ভব এবং ঐ সব দম্পতিকে থ্যালাসেমিয়ার প্রকোপ থেকে বাঁচানো সম্ভব। আমরা সরকারকে একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করে দিয়েছি। এটা হলে এবং সচেতনতা বাড়লে ধীরে ধীরে মানুষ বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক এটা মেনে নিবে।

বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া হাসপাতালের প্রধান মেডিসিন অফিসার ডা. কবীরুল ইসলাম বলেন, আমাদের হাসপাতালে প্রতিমাসে এক হাজারের বেশি রোগী আসে রক্ত নিতে। আমরা ৩০০ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিত্সা দিয়ে থাকি। আমরা এই হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ২০ ভাগ ছাড়ে চিকিত্সা দিয়ে থাকি। তিনি বলেন, এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Advertisement
জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন4 weeks ago

ওষুধ খাওয়ার ভুলে অসুস্থতা

জ্বর বা মাথাব্যথা হলেই প্যারাসিটামল, অ্যালার্জির জন্য হিস্টাসিন কিংবা গ্যাসের ট্যাবলেট- এই ধরনের ওষুধগুলো আমরা হরহামেশাই খাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই।...

খাদ্য ও পুষ্টি1 month ago

শিশুদের জন্য লবণ যতটুকু দরকার

অতিরিক্ত লবণ শিশুর বৃদ্ধিতে বাধা প্রদানের পাশাপাশি অল্প বয়সে রক্তচাপের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। খাদ্যাভ্যাসে এমন পরিমাণ লবণ রাখতে হবে যা...

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন1 month ago

ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কেন

বয়সে টিংকু বেশ ছোট। এত ছোট যে মাঝেমধ্যে টিংকুর দাঁত পড়ে। একবার বিড়াল টিংকুকে আঁচড়ে দিল। চিকিৎসক বললেন যে র‌্যাবিসের...

Advertisement