স্বাভাবিকের তুলনায় সিজারে জন্ম নেওয়া শিশুদের শরীরে হামের টিকা কম কার্যকর বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণা বলছে, সি-সেকশনের শিশুদের ক্ষেত্রে এই টিকা ‘সম্পূর্ণ অকার্যকর’ হওয়ার সম্ভাবনা ২ দশমিক ৬ গুণ বেশি।
যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ ও চীনের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করে। এতে গবেষকরা চীনের হুনান প্রদেশের ১৫০০ শিশুর ডাটা ব্যবহার করেছেন।
এসময় সিজারিয়ান শিশুদের ১২ শতাংশের শরীরে হামের টিকার প্রথম ডোজের কোনো কার্যকারিতা পরিলক্ষিত হয়নি। বিপরীতে স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে এর হার ৫ ভাগ। তবে দ্বিতীয় ডোজের বেশ কার্যকারিতা লক্ষ্য করা গেছে।
সিজারিয়ান শিশুর শরীরে হামের টিকার কম কার্যকারিতার কারণ হিসাবে গবেষকরা বলছেন, সাধারণত জন্মগ্রহণের সময় মায়ের শরীর থেকে শিশুর অন্ত্রে মাইক্রোবায়োম (উপকারী অণুজীব) স্থানান্তরিত হয়। যা হামসহ বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কিন্তু সিজারের ক্ষেত্রে শিশু প্রসূতির মাইক্রোবায়োমের সংস্পর্শে কম আসে। ফলে মাইক্রোবায়োমের বিকাশের অভাবে শিশুর শরীরে হামের টিকার প্রথম ডোজের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজটি হামের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।
গবেষকদলের একজন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেনরিক সালজে বলেন, ‘আমরা জানি, শিশুদের বড় একটি অংশ হামের টিকার দ্বিতীয় ডোজ পায় না। এটি তাদের পাশাপাশি বৃহৎ সমাজের জন্যও ক্ষতিকর।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হতে চাই যে, সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে হামের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। কেননা প্রথম ডোজ ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’
হাম একটি অত্যন্ত সংক্রামক ব্যাধি। শিশুরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে তীব্র জ্বর, কাশি, সর্দি এবং সারা শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে এর টিকার দুইটি ডোজ গ্রহণ। তবে সারাবিশ্বেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার হার খুবই কম।