Connect with us

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন

সুস্থ জীবনের জন্য চাই সুনিদ্রা

যান্ত্রিক জীবনের অতি ব্যস্ততায় পর্যাপ্ত ঘুমানোর সময় নেই অনেকের। অথবা হয়তো অনেকেই রাতের পর রাত ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের সামনে বসে পার করছেন। সকাল থেকে আবার পড়াশোনা বা অফিসের কাজ। ঘুমানোর অত সময় কোথায়! কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুম জীবনের জন্য, শরীরের জন্য, সুস্থতার জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়। রাতের নির্বিঘ্ন, গভীর ঘুম পরদিন মানুষকে চনমনে রাখে, দিন শুরু হয় […]

Published

on

যান্ত্রিক জীবনের অতি ব্যস্ততায় পর্যাপ্ত ঘুমানোর সময় নেই অনেকের। অথবা হয়তো অনেকেই রাতের পর রাত ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের সামনে বসে পার করছেন। সকাল থেকে আবার পড়াশোনা বা অফিসের কাজ। ঘুমানোর অত সময় কোথায়! কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুম জীবনের জন্য, শরীরের জন্য, সুস্থতার জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়।

রাতের নির্বিঘ্ন, গভীর ঘুম পরদিন মানুষকে চনমনে রাখে, দিন শুরু হয় নতুন শক্তিতে, নতুন উদ্দীপনায়। এসব আমরা জানি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এর পাশাপাশি ঘুমের আরও কিছু উপকারিতার কথা বলছেন, যেগুলো একটু অন্যরকম ও নতুন শোনালেও তা গবেষণা থেকেই পাওয়া।
গবেষকরা বলছেন, যারা কম ঘুমায়, তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। দেখা গেছে, যারা রাতে মাত্র ৫ ঘণ্টা ঘুমায় তাদের দেহে ক্ষুধা উদ্রেককারী হরমোন বেশি নিঃসৃত হয়। এ নিঃসরণের পরিমাণ যারা ৮ ঘণ্টা ঘুমায় তাদের চেয়ে ১৫ ভাগ বেশি। একই সঙ্গে ক্ষুধা কমানোর হরমোনটিও কম নিঃসৃত হয়। বেশি ক্ষুধার কারণে এরা বেশি খায়, ফলে বেড়ে যায় তাদের বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই।

‘স্লিম ফিগারে’র জন্য চাই পর্যাপ্ত ঘুম
পর্যাপ্ত ঘুম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়ক। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একদল ব্যক্তিকে পিয়ানো বাজানো শিখিয়ে তাদের দুই গ্রুপে ভাগ করে দেন। এক গ্রুপ শেখার পরবর্তী ১২ ঘণ্টা ঘুমায়, অপর গ্রুপ এই ১২ ঘণ্টা জেগে থাকে। পরে দেখা যায়, যারা ঘুমিয়েছিল, তারা পিয়ানোতে সঠিক সুরটি তুলতে বেশি পারঙ্গমতা দেখিয়েছে। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলেন, এ সময় অন্য কোনো তথ্য বা কাজ তাদের ব্রেনকে ব্যস্ত না রাখায় শেখা সুরটি স্মৃতিতে ভালোভাবে গেঁথেছে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সুনিদ্রা প্রয়োজন। যখন আমরা ঘুমিয়ে থাকি, তখন দেহে ‘মেলাটোনিন’ হরমোন নিঃসৃত হয়, যা ক্যান্সার-প্রতিরোধী এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও। দেখা গেছে, যেসব মহিলা রাতে কাজ করেন, তাদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ৭০ গুণ বেশি। এছাড়া রাতের পর রাত জেগে থাকা মানুষের গ্যাস্ট্রিক আলসারের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। কারণ, গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিডের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে পাকস্থলির কোষকে রক্ষা করে যে রাসায়নিক পদার্থ, তা ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায়ই বেশি নিঃসৃত হয়।

বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখতেও ঘুমের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। রাতের পর রাত নিদ্রাহীনতা বার্ধক্যজনিত রোগের তীব্রতা বাড়ায়। অপরদিকে গবেষকরা দেখেছেন, যারা রাতে গড়ে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমায়, তারা সাড়ে চার ঘণ্টার কম ঘুম যাদের তাদের চেয়ে বেশিদিন বাঁচে।

Advertisement

অন্যদিকে, টিনএজারদের নিদ্রাহীনতা তাদের জীবন বিশৃঙ্খল করে তুলতে পারে। এরা অন্যদের চেয়ে বেশি বিষণ্নতায় ভোগে ও কম আত্মবিশ্বাসী হয়। চিকিত্সকরা বলেছেন, যারা ছোটবেলায় নিদ্রাহীনতায় ভোগে, তাদের বয়ঃসন্ধিকালে মাদকাসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ।

তাই জীবনকে অতি ব্যস্ততায় জড়িয়ে না ফেলে নিজের বিশ্রামের জন্য সময় বের করুন, পর্যাপ্ত সময় ঘুমান। যাপন করুন সুস্থ, নীরোগ ও দীর্ঘ জীবন।
(রিডার্স ডাইজেস্ট অবলম্বনে)

Continue Reading
Advertisement