কোন খারাপ খবর শুনে, খুব বেশী ভয় পেলে বা একই রকম নানা কারণে মানুষকে প্রায়ই অজ্ঞান হয়ে পড়তে দেখা যায়। অজ্ঞান অবস্থায় শরীর ঘামে ভিজে যায়, শরীর ঠান্ডা হয়ে পড়ে, দৈহিক বোধশক্তি কমে যায়। অজ্ঞান হবার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমনঃ আলো বাতাসহীন ঘর, অভূক্ত অবস্থা, প্রচন্ড ক্লান্তি, দারুণ যন্ত্রণা, কোন মর্মান্তিক মানসিক আঘাত। প্রশ্ন হল মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়ে কেন?
অজ্ঞান বা চেতনা লোপ কাকে বলে?
অজ্ঞান কেন হয় জানবার আগে জানতে হবে জ্ঞান বা চেতনা কাকে বলে। চেতনাকে পুরোপুরি বজায় রাখতে হলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল অব্যাহত রাখা দরকার। মস্তিষ্ক তার দরকার মত রক্তের যোগান পেলেই শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যেতে পারে। মস্তিষ্কের পুরোদমে কাজ করার মানেই হল জ্ঞান থাকা। তাই মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে কোন রকম অসুবিধা দেখা দিলেই শরীরের অন্যান্য কাজ ব্যহত হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে, যেকোন কারণেই হোক মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে কোন গোলমাল ঘটলেই সে গোলমালের ফল হল অজ্ঞান হয়ে পড়া। কেননা রক্তের যোগানে কমবেশী হওয়া মস্তিষ্ক সহ্য করতে নারাজ। আর তাই মাথার সঙ্গে শরীরটাও বিকল হয়ে পড়ে।
বাঁচার উপায়
কয়েকটা কাজ করলে অজ্ঞান হওয়ার হাত থেকে কিছুটা বাঁচানো সম্ভব। কাউকে সেরকম অবসন্ন হওয়ার মত দেখলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে শুইয়ে দেয়া উচিত। তাহলে সামনে ঝুঁকে পড়ে মাথাটাকে হাঁটু পর্যন্ত নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করতে হবে। এরকম করলে মস্তিষ্ক তার রক্তের যোগান ফিরে পেতে পারে আর তার ফলে জ্ঞান হারাবার ভয় কম থাকে।
হঠাৎ যদি কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে তাহলে তাকে শুইয়ে দিয়ে জামা-কাপড় একটু আলগা করে দেয়া উচিত। শোয়ানোর সময় মাথাটা একটু নিচু দিকে রেখে পায়ের দিকটা উঁচুতে রাখতে হবে। এতে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। জ্ঞান ফিরে আসার পর রোগীকে একটু গরম চা বা কফি খাওয়ালে ভাল হয়। আর মাথায় কোন আঘাত বা সর্দি-কাশির ফলে কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা উচিত।