Connect with us

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন

ওষুধ খাওয়ার ভুলে অসুস্থতা

Published

on

জ্বর বা মাথাব্যথা হলেই প্যারাসিটামল, অ্যালার্জির জন্য হিস্টাসিন কিংবা গ্যাসের ট্যাবলেট- এই ধরনের ওষুধগুলো আমরা হরহামেশাই খাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই। আর চিকিৎসকের পরামর্শপত্রের উপর বাড়তি ডাক্তারি করার অভ্যাস তো আছেই।

রোগ নিরাময়ের অসংখ্য ওষুধের মাঝে আছে ঝুঁকি। অন্যতম হল ভুল ওষুধ খাওয়া ঝুঁকি। রোগ নিরাময়ে পরিবর্তে তীব্রতা বাড়া থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত নানাবিধ ঝুঁকি মিশে আছে ভুল ওষুধ খাওয়ার পেছনে।

আর এই ভুলের শিকার হন বেশিরভাগ প্রবীন রোগী, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এর মধ্যেই অনেক দূর্বল হয়ে গেছে, শরীরে বাসা বেঁধেছে দুরারোগ্য ব্যাধি এবং প্রতিদিন একাধিক ওষুধ তাদের সেবন করতে হয়।

ভুল ওষুধ খাওয়া, ভুল মিশ্রণে কিংবা ভুল সময়ে ওষুধ খাওয়া ইত্যাদির ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে জানানো হল স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।

ভুল মিশ্রণে ওষুধ খাওয়া: দুটি বিপরীতধর্মী ওষুধ একসঙ্গে খাওয়া একজন মানুষকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। কারণ দুটি বিপরীতধর্মী ওষুধ একসঙ্গে খেলে একটি আরেকটির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে কোনোটাই শরীরের কোনো কাজে আসে না এবং যে রোগের জন্য ওষুধ খাওয়া হলো সেটাতেও কোনো প্রভাব পড়ে না। পাশাপাশি দেখা দিতে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া। যেমন- ‘অ্যান্টিডিপ্রিসেন্ট’ এবং ‘মেথাডন’ এই দুই ধরনের ওষুধ একসঙ্গে খেলে এমনটা হয়। সাধারণ ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রেও এমনটা হতে পারে।

Advertisement

ওষুধ সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে খাওয়া: চিকিৎসক কোনো ওষুধ দিলে তার কাছ থেকেই ওই ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। জানতে হবে তা কীভাবে সেবন করতে হবে, কখন নিতে হবে, কী পরিমাণে নিতে হবে এবং তার কী পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে তা সম্পর্কে। অনেক সময় ডাক্তারের লিখে দেওয়া ওষুধ দোকানে না থাকায় একই ধরনের কিন্তু অন্য প্রস্তুতকারীর ওষুধ দিতে চায় দোকানিরা। দুটো ওষুধ আসলেই এক কিনা সেটাও নিশ্চিত হতে হবে ওষুধের ‘জেনেরিক’ নাম কিংবা তাতে থাকা উপাদানের তালিকা দেখে। ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকলে তা সেবনে ভুল হওয়ার আশঙ্কা কমবে।

বেশি মাত্রার ওষুধ খাওয়া: ওষুধ যত সাধারণই হোক না কেনো তা চিকিৎসকের বাতলে দেওয়া পরিমাণেই খেতে হবে। কারণ বেশি ওষুধ খেলে তা যকৃতের উপর বাড়তি চাপ ফেলে এবং বাড়তে পারে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার মাত্রা। সেইসঙ্গে মাথা ঘোরানো, মানসিকভাবে দ্বিধাগ্রস্ত থাকা, বুকে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আবার চিকিৎসক যতবার সেবন করতে বলেছেন তার চাইতে বেশিবার সেবন করাও ক্ষতিকর।

ওষুধ খেতে ভুলে যাওয়া: দীর্ঘদিন ধরে খেতে হবে এমন ওষুধে এই বিপত্তি হতে পারে। আবার কিছুটা সুস্থ বোধ করার পর ওষুধের কোর্স পুরণ না করাতো আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। খুব হেলাফেলার সঙ্গে যে কাজটি আমরা করে ফেলি তার ভবিষ্যত ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ। বিশেষ করে ‘অ্যান্টিবায়োটিক, ‘অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্টস’, ‘স্টেরয়েড’, ‘ব্লাড থিনিং মেডিসিন’ ইত্যাদি কখনই ভুল করা যাবে না কিংবা মাঝপথে বন্ধ করা যাবে না।

খালি পেটে ওষুধ খাওয়া: কিছু ওষুধ চিকিৎসক বলে দেন খালি পেটে খেতে। সেগুলো ছাড়া কোনো ওষুধই খালি পেটে গ্রহণ করা উচিত হবে না। আবার কিছু ওষুধ খাবারের পার খাওয়া উচিত নয়, যার সম্পর্কে চিকিৎসকই জানাবেন। ছোটখাট এই বিষয়গুলোকে অবহেলা করার ফল হতে পারে মারাত্বক।

নিজের মনে ওষুধ খাওয়া: এই সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। সবাই জানেন এটি কতটা ক্ষতিকর হতে পারে। আলসেমি কিংবা চিকিৎসকের মজুরির পয়সা বাঁচাতে অসংখ্য মানুষ এই কাজ করেন। সাধারণ সর্দিজ্বরের জন্য সমস্যা হয়ত নেই তবুও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যেকোনো ওষুধ সেবন করাই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বিপদে না পড়লে বেশিরভাগ মানুষই তা বুঝতে চান না।

Advertisement

অন্যের কথা শুনে ওষুধ খাওয়া: ডাক্তার হিসেবে আমরা কেউ কম যাই না! নিজে তো ডাক্তারি করিই, অন্যদের অসুস্থতাতেও পরামর্শ দিতে আমরা পিছপা হইনা। রোগ যত সাধারণ বা মারাত্বকই হোক না কেনো, সবার কাছেই কোনো না কোনো চিকিৎসা আছে। আরও ভয়ঙ্কর বিষয় হল রোগীও চিকিৎসকের পরামর্শের চাইতে আশপাশের মানুষের পরামর্শে ভরসা করেন বেশি। আপনার আর আপনার বন্ধুর উচ্চ রক্তচাপ আছে বলেই যে দুজন একই ওষুধ খেতে পারবেন এমনটা নাও হতে পারে। চিকিৎসক ওষুধ দেন রোগীর শারীরিক অবস্থা, বয়স, অন্যান্য রোগ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে।

তাই রোগ হলে চিকিৎসকের কাছে যান, একই রোগে আক্রান্ত পরিচিত মানুষটির কাছে নয়।

Continue Reading
Advertisement
Advertisement
জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন4 weeks ago

ওষুধ খাওয়ার ভুলে অসুস্থতা

জ্বর বা মাথাব্যথা হলেই প্যারাসিটামল, অ্যালার্জির জন্য হিস্টাসিন কিংবা গ্যাসের ট্যাবলেট- এই ধরনের ওষুধগুলো আমরা হরহামেশাই খাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই।...

খাদ্য ও পুষ্টি4 weeks ago

শিশুদের জন্য লবণ যতটুকু দরকার

অতিরিক্ত লবণ শিশুর বৃদ্ধিতে বাধা প্রদানের পাশাপাশি অল্প বয়সে রক্তচাপের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। খাদ্যাভ্যাসে এমন পরিমাণ লবণ রাখতে হবে যা...

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন1 month ago

ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কেন

বয়সে টিংকু বেশ ছোট। এত ছোট যে মাঝেমধ্যে টিংকুর দাঁত পড়ে। একবার বিড়াল টিংকুকে আঁচড়ে দিল। চিকিৎসক বললেন যে র‌্যাবিসের...

Advertisement