॥ ই-হেলথ২৪ ডেস্ক ॥ গরমের এই সময়ে সারাদিনের খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন_ পর্যাপ্ত পানি, ফল, ফলের রস, অতিরিক্ত তেল-মসলা ছাড়া তরকারি, সবজি, ডাল ও পর্যাপ্ত সালাদ। ফল, ফলের রস, সবজি ও সালাদ আপনার শরীরে প্রচুর পানি ও আঁশ সরবরাহ করে শরীরকে রাখবে কর্মক্ষম ও সুস্থ।
ফল ও সবজিতে বিদ্যমান এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন-মিনারেলস আপনার শরীরের পানি ও পিএইচ মাত্রা ব্যালেন্স করবে এবং ঠিক রাখবে সোডিয়াম-পটাশিয়াম লেভেলও। মাঝেমধ্যে ডাবের পানি ও স্যালাইন খেতে পারেন। তবে যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তারা স্যালাইন বা ডাবের পানির বদলে স্বাভাবিক খাবার পানি পান করুন বেশি করে।
ভাত, রুটি যে যাই খেয়ে অভ্যস্ত তার সঙ্গে তরকারি নির্বাচন করে তেল ও অতিরিক্ত মসলা নিয়ন্ত্রিত করুন। কেননা, অন্ত্রকে উত্তেজিত করে এমন খাবার গরমে অবশ্যই বর্জনীয়। বেছে নিন পেঁপে, কলা, লাউ, ডাঁটা, শসা, করলা, ঢেঁঢ়স, লাল শাক, পুঁই শাক, কলমি শাক, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বরবটি, পটোল প্রভৃতি তরকারি। পাশাপাশি দেশি মাছ। ছোট মাছের একটি পদ রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এবং ভুনার বদলে রাখুন পাতলা ঝোলের তরকারি। মাংসের ক্ষেত্রে সাদা মাংসকেই প্রাধান্য দিন লাল মাংসের পরিবর্তে। আর খাবার অবশ্যই হবে লো-ক্যালরির ও সুষম।
এ সময়ে হোটেল-রেস্টুরেন্টে তৈরি খাবার, পানি, রাস্তার পাশে তৈরি নানা শরবত, পানীয়, হারবাল জুস, আইসক্রিম ও খাবার একেবারেই বর্জন করুন। কারণ, এগুলো প্রত্যেকটি একেকটি জটিল রোগের আধার যা আাপনার স্বাস্থ্যের সুরক্ষার চেয়ে ক্ষতিই করবে বেশি। তাই রাস্তায় তৈরি খাবার, শরবত, আখের রস, বরফ পানি, আইসক্রিম প্রভৃতি খাওয়ার আগে নিশ্চিত হন সেগুলো কতটা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি।
সকালের নাশতার টেবিলে যে কোনো ফলের জুস রাখুন। হতে পারে পাকা পেঁপে, কাঁচা কিংবা পাকা আম, গাজর, শসা কিংবা টমেটোর জুস। নানা পদের দেশি টক ফল মিলিয়ে ককটেল জুস করেও খেতে পারেন। নাশতায় ডিম অমলেট না খেয়ে সিদ্ধ করে খান, শরীরে ক্যালরি কম যাবে।
বিকাল ও সন্ধ্যায় যে দুটি স্ন্যাকস টাইম আছে, সে সময়ও চেষ্টা করুন ফল অথবা সবজির সালাদ ধরনের খাবার বেছে নিতে। বাঙ্গি, তরমুজ, আনারস, পেঁপে, বেল, কলা, তালের কোষ, আম, জাম ও জামরুলের মতো দেশি রসালো ফলগুলো আপনার জন্য যথেষ্ট উপকারি। এসবই খেতে পারেন টুকরো করে, জুস কিংবা সালাদ করে।
যারা ডায়াবেটিক, তারা অপেক্ষাকৃত কম মিষ্টি ফল, জুসে চিনি ছাড়া অথবা বিকল্প চিনি মিশিয়ে খেতে পারেন। সেই সাথে রাখতে পারেন টক দই, দইয়ের লাচ্ছি, লেবুর শরবত রাখুন সারাদিনের খাদ্য তালিকায়। খেতে পারেন দই-চিঁড়া, ঠান্ডা মিল্ক শেক, ম্যাংগো মিল্ক। বাসায় মেহমান এলে ঠান্ডা লেবুর শরবত, লাচ্ছি কিংবা ম্যাংগো মিল্ক দিয়ে শুরু করুন আতিথেয়তা। এতে অতিথির স্বাথ্য ও মন দুটোই ভালো থাকবে।
অন্যদিকে মাগুর, কৈ, শিং, পুঁটি, বেলে, টেংরা, কাচকি, শোল, টাকি, পাবদা, পোয়া, কাজলি, মলা মাছের পাতলা ঝোল স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। খেতে পারেন টমেটো কিংবা কাঁচা আমের সঙ্গে ছোট মাছের টকজাতীয় ঝোল রান্না করে।
প্রচন্ড গরমের সময় রাতের খাবারও হবে খুব হালকা। ঘুমাতে যাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবারের পর্ব শেষ করুন এবং বেড টাইমে এক গ্লাস লেবু পানি কিংবা এক কাপ টক দই অথবা স্কিমড মিল্ক খেয়ে ঘুমাতে যান। হাই ক্যালরি অর্থাৎ রিচ ফুড রাতে খাওয়ার অভ্যাস না থাকাই ভালো।
গরমের সময় সারাদিনের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টি ও উচ্চ ক্যালরিবহুল খাবার। বাদ দিন চর্বিসমৃদ্ধ মাছ ও মাংস।