Connect with us

স্বাস্থ্য সংবাদ

রাজধানীতে রাস্তার পাশের রঙের কাজে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাজধানীর ফুটপাতে ও রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় নানা কাজে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ সমৃদ্ধ রং স্প্রে করে ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব রং স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি। তবে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে রং সেপ্র করার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ নেই।রাজধানীর আজিমপুর, বংশাল, মিরপুর, মগবাজার, লোহারপুল এলাকা ঘুরে গ্যারেজের সামনে গাড়ি […]

Published

on

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাজধানীর ফুটপাতে ও রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় নানা কাজে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ সমৃদ্ধ রং স্প্রে করে ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব রং স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি। তবে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে রং সেপ্র করার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ নেই।
রাজধানীর আজিমপুর, বংশাল, মিরপুর, মগবাজার, লোহারপুল এলাকা ঘুরে গ্যারেজের সামনে গাড়ি ও দোকানের সামনে স্টিলের আলমারি, বাক্স, ধাতব আসবাবে রং স্প্রে করতে দেখা গেছে।

আজিমপুরের স্যার সলিমুল্লাহ এতিমখানা মার্কেটের নিচতলায় স্টিলের আসবাবের ও রেফ্রিজারেটর মেরামতের অনেকগুলো দোকান। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব দোকানে কাজ চলে। দোকানের ভেতর ও ফুটপাতে রঙের কাজ করা হয়। এর আশপাশে আজিমপুর গার্লস স্কুল, অগ্রণী স্কুল ও কলেজ, ভিকারুন নিসা নূনসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই এলাকার নিয়মিত পথচারী এমদাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে দিনে দুবার এই পথে চলাচল করতে হয়। রঙের গন্ধে নাক চেপে ধরে পথ চলতে হয়। পথচারীদের সমস্যা সম্পর্কে আজিমপুরের এক দোকানমালিক বলেন, ‘দোকান যেহেতু এখানে, তাই কাজও করতে হবে এখানেই। আমাদের কিছু করার নেই।’ বংশালের বাসিন্দা মুনিরা জামান বলেন, রঙের উৎকট গন্ধে তাঁর বমি আসে।

এই রং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন আ ব ম ফারুক প্রথম আলোকে জানান, গাড়িতে বা ধাতব আসবাবে ব্যবহার করা রঙে কার্বন পেট্রোক্লোরাইট, এসিটোন, বেনজিনের মতো রাসায়নিক থাকে। এসব রাসায়নিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। উদ্বায়ী বা সহজে ওড়ে বলে এসব রাসায়নিক রং করার সময় বাতাসে মিশে নিঃশ্বাসের সময় সরাসরি ফুসফুসে যায়।

কাঁটাবনের গাড়ির গ্যারেজে কাজ করেন আবদুল হাকিম। প্রায় ১২ বছর রং স্প্রের কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘হুনছিলাম রং করবার সময় রুমাল দিয়া মুখ বাঁধন লাগে, তয় রুমাল বাইন্দা কাম করলে দম আটকাইয়া আহে। তাই এমনেই রং করি।’ শারীরিক সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ, আমার আর কী হইব? খাবার রুচি নাই, কাশি হয়, অসুদ খাই, ঠিক হইয়া যায়।’ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এঁদের ক্ষতি হয় বেশি। এঁদের উচিত কাজের সময় নাকেমুখে প্রতিরোধক ব্যবহার করা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নাক-কান-গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবুল হাসনাত জোয়ার্দার প্রথম আলোকে বলেন, রং নাক দিয়ে মানুষের শরীরে ঢুকলে কিডনি, ফুসফুস, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ হতে পারে। গর্ভবতী মায়ের নাক দিয়ে রং ঢুকলে গর্ভের শিশুরও ক্ষতি হয়। রং করার সময় কেউ পাশ দিয়ে গেলে তার চর্মরোগ বা এলার্জি দেখা দিতে পারে, শ্বাসকষ্টও হতে পারে। তিনি বলেন, স্প্রে করা রং শিশুদের শ্বাসতন্ত্রে বড় ধরনের ক্ষতি করে।

Advertisement

এসব দোকান বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পরিবেশ অধিদপ্তর নিশ্চুপ। অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বিভাগের পরিচালক মো. শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, স্প্রে রং স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর। তবে এই বিষয়ে অধিদপ্তরে কখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তা ছাড়া জনবলের অভাবে এ রকম বিষয় তাঁরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে পারেন না।

Continue Reading
Advertisement