প্রধান খবর
স্বাস্থ্য খাতে আসছে বড় পরিবর্তন, সাত অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন হচ্ছে
স্বাস্থ্য খাতে আসছে বড় পরিবর্তন। সাতটি অধিদপ্তর, দপ্তর ও প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করে হচ্ছে তিনটি অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম হতে যাচ্ছে ‘চিকিৎসাসেবা অধিদপ্তর’। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা এই দুই বিভাগ এক করারও নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এই সংস্কার সম্পন্ন হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও দেশে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই খাতে সংস্কারের জন্য বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই আলোকে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে সংস্কারের সুপারিশ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও চিকিৎসা গবেষণাসহ স্বাস্থ্য খাতের পুরো কার্যক্রম চালাতে আছে সাতটি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো- স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, জাতীয় পুষ্টি পরিষদ, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিউিট। এতগুলো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ছিল। যার প্রভাব পড়ত স্বাস্থ্য বিভাগের কাজে। ফলে এগুলো ভেঙে তিনটি অধিদপ্তর করার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নাম হবে চিকিৎসাসেবো অধিদপ্তর। দপ্তরটি দেশের সব হাসপাতালের কর্মপরিধি দেখভাল করবে। দ্বিতীয়টির নাম হবে ‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর’। এটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও রোগ প্রতিরোধে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে। অন্যদিকে এমবিবিএস, বিডিএস (ডেন্টাল) ও নার্সিংসহ সব ধরনের চিকিৎসাসেবা ও গবেষণার দায়িত্বে থাকবে ‘স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণা অধিদপ্তর’।
এছাড়া ‘মেডিসিন অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটেরি অথোরিটি’ নামকরণ করে আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী করা হবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে। ওষুধের পাশাপাশি কসমেটিসের বিষয়টি দেখভাল করবে এই প্রতিষ্ঠান। ওষুধ, টিকা, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ সব স্বাস্থ্য প্রযুক্তির উপযোগিতা মূল্যায়ন করা হবে হেলথ টেকেনোলজি অ্যাসেসমেন্ট ইউনিটে। এটি স্বাস্থ্য খাতের সব ধরনের প্রযুক্তিগত ক্রয়, সংগ্রহ এবং অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দেবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান জানান, স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়হীনতা কমিয়ে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোরায় পৌঁছাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অধিদপ্তর সংস্কার ও লোকবল বিন্যাস- সবকিছুর মূল হলো একজন মানুষ প্রয়োজনের সময় যেন সব ধরনের সেবা পান। এটি নিশ্চিত করাই মূল উদ্দেশ্য।
অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতে কয়েক হাজার পদ আছে। গ্রেড মিলিয়ে এই পদগুলোকে অ্যালাইন করা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ফলে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্তে এক হয়ে উপর দিকে মার্জ হওয়ার বিষয়টি আমরা করে দিয়ে যাব। আশা করি এটি অনুমোদন হয়ে যাবে। এরপর পর্যায়ক্রমে গ্রেডগুলো মিলিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রণালয় পর্যন্ত অনুমোদন হয়ে গেলে অধিদপ্তরগুলোতে অনুমোদন হতে বেশি সময় লাগবে না।
