২০৫০ সালের মধ্যে মানুষের গড় আয়ু আরো ৫ বছর বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণা বলছে, মানুষের বর্তমান গড় আয়ু ৭৩ দশমিক ৬ বছর থেকে বেড়ে হবে ৭৮ দশমিক ১। এর মধ্যে পুরুষের গড় আয়ু হবে ৭৬ দশমিক ২ বছর। আর নারীদের হবে ৮০ দশমিক ৫ বছর।
গড় আয়ু বাড়ার পাশাপাশি প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যকর আয়ুও বাড়ার সুখবর দিয়েছেন গবেষকরা। ২০৫০ সালে মানুষের প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যকর আয়ু ৬৪ দশমিক ৮ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৬৭ দশমিক ৪ বছরে। তবে গবেষকরা আরেকটি খারাপ খবরও দিয়েছেন। তা হচ্ছে, আয়ু বাড়লেও অনেক মানুষকেই ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে বাঁচতে হবে।
গতকাল শুক্রবার (১৭ মে) চিকিৎসাবিজ্ঞান সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাপত্রের তথ্য মতে, বর্তমানে কম এমন স্থানেই বেশি বাড়বে গড় আয়ু। যা বিশ্বব্যাপী গড় আয়ুর ব্যবধান কমাতে অবদান রাখবে। মূলত, বিভিন্ন সংক্রামক, মাতৃত্বকালীন, নবজাতক ও পুষ্টিজনিত রোগ (সিএমএনএন) থেকে বেঁচে থাকার হার বৃদ্ধি এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও কভিড-১৯ এর মতো রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণেই এই গড় আয়ু বাড়বে।
তবে একই সময়ে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের (এনসিডি) হার বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন রোগের বোঝা চেপে বসবে মানুষের ঘাড়ে। এর পিছনে স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও ধূমপান প্রভৃতি বেশি প্রভাব রাখবে। ফলে দ্রুত মৃত্যুর জায়গাটি দখল করবে অক্ষমতার সাথে বেঁচে থাকা। এ কারণে মানুষ দীর্ঘজীবী হলেও বাঁচবে খারাপ স্বাস্থ্য নিয়ে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ মেট্রিক্স সায়েন্সের চেয়ারম্যান ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের পরিচালক ড. ক্রিস মারে বলেন, ‘গড় আয়ু বৃদ্ধির ফলে মানুষের আয়ুর বৈষম্য কমে যাবে। এটি এও নির্দেশ করে যে, সবচেয়ে বেশি আয়ের দেশ ও কম আয়ের দেশের মধ্যে বৈষম্য থাকবে, তবে সেটি কমে আসবে। সবচেয়ে বেশি আয়ু বাড়বে সাব-সাহারান আফ্রিকায়।’
‘বিশ্বব্যাপী রোগের ভার দ্রুত হ্রাস করার সবচেয়ে বড় সুযোগ হলো আচরণগত ও মেটাবলিক রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো প্রতিরোধ ও প্রশমিত করার লক্ষ্যে পলিসি গ্রহণ’, যোগ করেন ড. মারে।