যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক অ্যান্ড রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিক কোম্পানি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী নতুন ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ তৈরি করেছে। কোভিড–১৯ এর চিকিৎসায় নতুন এই ওষুধ দেশে উৎপাদন ও ব্যবহারের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে সরকার। এ সপ্তাহের মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই অনুমোদন পাবে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব ওষুধ কোম্পানি এই ওষুধ উৎপাদনের অনুমোদন চেয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করেছে। খুব শিগগির এদের ‘রেসিপি’ অনুমোদন দেওয়া হবে। এসকেএফ, স্কয়ার, বেক্সিমকো, রেনেটা, ইনসেপ্টা, বিকনসহ ৮ থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠান এই তালিকায় আছে।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এতদিন অনুমোদিত কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ ছিল না। ‘মলনুপিরাভির’ সে ক্ষেত্রে নতুন আলোর সন্ধান দিয়েছে। ওষুধটি চার দিন আগে যুক্তরাজ্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। এই ওষুধ সেবন করলে করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি থাকার প্রয়োজন কমবে, মৃত্যুও কমবে।
যুক্তরাজ্যে অনুমোদনের চার দিন পর ওষুধটি দেশে উৎপাদন ও ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর রেসিপি অনুমোদনের উদ্যোগ নিয়েছে। রেসিপি অনুমোদনের পর ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজেরা বড়ি তৈরি করে নমুনা জমা দেবে। তা পরীক্ষা করে দেখবে অধিদপ্তর। সব ঠিক থাকলে কোম্পানিগুলো ‘মলনুপিরাভির’ উৎপাদন ও বাজারজাত করার অনুমোদন পাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোম্পানি মার্ক শার্প অ্যান্ড ডোম (এমএসডি) ও রিজেবাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে তৈরি করেছে লাগেভ্রিও (মলনুপিরাভির) নামে মুখে খাওয়ার এই ওষুধ।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন সোমবার রাতে বলেন, বাংলাদেশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই ওষুধ তৈরির জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
“আমাদের কাছে বেক্সিমকো, স্কয়ার, এসকেএফ, ইনসেপ্টা, জেনারেল ফার্মা, বিকন ফার্মা, রেনাটাসহ ১০টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। আজ বেক্সিমকোকে ইমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশন দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে অথরাইজেশন দেওয়া হবে। সেগুলো প্রক্রিয়াধীন।”
মলনুপিরাভির মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারছে বলে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে প্রমাণ মিলেছে। কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের দিনে দুবার করে এই ওষুধ দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের উপসর্গের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার প্রথম ওষুধটি যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সির (এমএইচআরএ) অনুমোদন পেয়েছে।
আইয়ুব হোসেন বলেন, “আমরা চাই বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মুক্ত হোক। যত দ্রুত ওষুধটি আনা যায়, ততই ভালো। এজন্য আমরা চেষ্টা করছি।”
এই অনুমোদন পাওয়ার পর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো মলনুপিরাভির ওষুধ তৈরি করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে জমা দেবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করার অনুমতি দেবে।