আমাদের দেশে এখন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ অবস্থা দেখে বলা হচ্ছে, আমাদের দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। কারণ, একমাত্র সচেতনতাই পারে করোনা প্রতিরোধ করতে।
আমরা জানি, করোনাতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তার ওপর রোগী যদি হন অ্যাজমার, তাহলে শ্বাসকষ্ট আরও ভয়াবহ হতে পারে। ফলে অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীরা এ সময়ে বেশ ঝুঁকির মধ্যে আছেন বলেই ধরে নিতে হবে। এ কারণে তাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে, যাতে করোনা সংক্রমণ না হয়।
প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন
১) প্রথমেই আপনার অ্যাজমা বা হাঁপানি চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধ কমপক্ষে এক মাসের জন্য ব্যবস্থা করে রাখুন।
২) স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। নিয়মিত হাত ধুতে হবে। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য আপনার হাত সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
৩) অন্য ব্যক্তিদের থেকে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
৪) ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরুন।
৫) যে কোনও অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।
৬) করোনার ঝুঁকি কমাতে যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকুন।
৭) আপনার পরিবারে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা রাখুন।
অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
১) আপনার অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসারে হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট থাকুন।
২) ঠাণ্ডা, ধুলাবালি এড়িয়ে চলুন। ফ্রিজের পানি, আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া বাদ দিন। এ ছাড়া যে সব কারণে আপনার হাঁপানি বেড়ে যায় বলে মনে করেন, সে সব এড়িয়ে চলুন।
৩) কোনও ওষুধ নিজে নিজে বন্ধ করবেন না। স্টেরয়েডযুক্ত যে কোনও ইনহেলারসহ বর্তমান ওষুধগুলো চালিয়ে যান।
৪) মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমান। কারণ, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ হাঁপানি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
করোনা হয়ে গেলে যা করবেন
১) চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২) নিজেকে পরিবারের অন্যদের থেকে আলাদা করুন।
৩) কুসুম গরম পানি খান। গরম চা, লেবু, ভিটামিন সি, স্যুপ খেতে পারেন।
৪) শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে নেবুলাইজ করুন।
৫) বাড়িতে অক্সিজেন স্যাচুরেশন (পালস অক্সিমেট্রি) মাপার যন্ত্র রাখুন। নিয়মিত অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখুন। এটা ঠিক থাকলে সাধারণত জটিলতা হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
৬) অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে (৯৪% এর নিচে) বা শ্বাসকষ্ট হলে দেরি না করে হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
পরিশেষে বলব, সব সময় সতর্ক থাকুন। সাবধানে থাকুন। অহেতুক আতঙ্কিত হবেন না। তাতে হাঁপানি আরও বেড়ে যেতে পারে। কারণ, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা হাঁপানি এবং করোনা নিরাময় নয়, বরং তাকে আরও বাড়িয়ে জটিল করে তুলতে পারে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ, এনাম মেডিকেল কলেজ