Connect with us

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন

খেলোয়াড়রা ইনজুরি এড়াবেন যেভাবে

ডা. এম শহীদুর রহমানবাংলাদেশসহ বিশ্ব এখন কাঁপছে ক্রিকেট ফিভারে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশেও চলছে বিভিন্ন গেমসের ঘরোয়া আয়োজন। যাদের কারণে আমরা মেতে থাকি সেই সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের অনেকেই অকালেই ঝরে যায় ইনজুরির কারণে। একজন ক্রীড়াবিদের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণকালীন আঘাত ও অসুস্থতা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা জরুরি। এছাড়াও খেলাধুলায় সক্রিয়ভাবে ফিরে আসার জন্য চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কোন […]

Published

on

ডা. এম শহীদুর রহমান
বাংলাদেশসহ বিশ্ব এখন কাঁপছে ক্রিকেট ফিভারে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশেও চলছে বিভিন্ন গেমসের ঘরোয়া আয়োজন। যাদের কারণে আমরা মেতে থাকি সেই সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের অনেকেই অকালেই ঝরে যায় ইনজুরির কারণে। একজন ক্রীড়াবিদের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণকালীন আঘাত ও অসুস্থতা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা জরুরি। এছাড়াও খেলাধুলায় সক্রিয়ভাবে ফিরে আসার জন্য চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কোন বিকল্প নেই।
প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণকালীন খেলোয়াড়দের খাদ্য ও পুষ্টিসংক্রান্ত গাইডলাইন, ওষুধ ও অ্যালকোহলের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রতিযোগিতার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা স্পোর্টস মেডিসিনের অন্তর্ভুক্ত।
প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুতি
কেমন হবে
হাড় ও মাংসপেশিকে সক্রিয় ও শক্তিশালী করতে হলে সুষম খাবার খেতে হবে। প্রশিক্ষণের সময় শরীরের যে অংশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, সে অংশকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং রিকভার করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে হবে। লক্ষ্য রাখবেন, প্রশিক্ষণ যত শক্ত হবে রিকভার করার সময়ও তত বেশি হবে। প্রশিক্ষণের আগেই কোনও নির্দিষ্ট খেলার জন্য বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে এটি করার জন্য তার শারীরিক যোগ্যতা আছে কিনা।
ফিজিক্যাল ফিটনেস
ইচ্ছে বা আগ্রহ থাকলেই যে একজন ভালো খেলোয়াড় হতে পারবেন এমন কোন কথা নেই। প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় বা শক্তির প্রয়োজন হয় এমন খেলা যেমন ফুটবল, হকি, ভলিবল, ক্রিকেট ইত্যাদিতে হাড়, জোড়া ও মাংসপেশিগুলোকে যথেষ্ট শক্তিশালী হতে হয়। কোন রকম ডিফরমিটি থাকা যাবে না। এক্ষেত্রে হƒৎপিণ্ড এবং ফুসফুস সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে হবে। যাদের হাড় ও মাংসপেশি মজবুত নয় বা এতে ডিফেক্ট আছে অথবা যারা নিয়মিত ব্যায়াম বা খেলার আগে পর্যাপ্ত ওয়ার্মআপ করেন না সাধারণত খেলার সময় তারাই বেশি ইনজুরির শিকার হন। অনেকদিন ব্যায়াম না করে অলসভাবে শুয়ে থাকলে শরীরের অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা
কমে যায়। ফলে হƒৎপিণ্ড এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে আসে। মাংসপেশির টোনও কমে যেতে থাকে।
কোনও খেলোয়াড় আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর ব্যায়াম ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি শারীরিকভাবে ফিট হয়ে প্রতিযোগিতায়
নামতে পারবেন।
ওয়ার্মআপ ব্যায়াম
খেলা শুরুর আগে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে উষ্ণ করতে হয়। এর ফলে আঘাত প্রতিরোধ হয় এবং পারদর্শিতা বাড়ে। শুধু তাই নয়, এতে মাংসপেশিগুলোতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং উষ্ণ হয়। কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট ওয়ার্মআপ ও স্ট্রেসিং না করে যারা প্রতিযোগিতায় নামেন তার তুলনামূলকভাবে বেশি ইনজুরির শিকার হন। ওয়ার্মআপ খেলোয়াড়কে মানসিকভাবেও প্রস্তুত করতে সাহায্য করে।
তাই দেখা যাচ্ছে প্রশিক্ষণ পর্বে ইনজুরি এড়াতে হলে সঠিক কৌশলে ব্যায়াম ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে হবে। প্রশিক্ষক এবং প্রশিক্ষণার্থী উভয়কে শরীরের এনাটমি বা গঠন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। বেশি সময় ধরে বেশি মাত্রায়, বেশি ভারি কাজ করলে ইনজুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইনজুরি এড়াতে হলে একজন প্রশিক্ষককে জয়েন্ট ও শরীরের ভালনারেবল পার্টস প্রটেকশন টেকনিক ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। এ নিয়মের মাধ্যমেই একজন প্রতিভাবান ও সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়কে সঠিকভাবে প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

Continue Reading
Advertisement