নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্টার পদ থেকে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের অপসারণ ও পৃথক নার্সিং ক্যাডার ব্যবস্থা চালু করে প্রশাসনিক পদগুলোতে নার্স নিয়োগের একদফা দাবিতে সারাদেশে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন নার্সরা।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এছাড়াও সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলে এই অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে বলেও জানা গেছে।
নার্সদের অভিযোগ, নার্সিং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং পরিচালক পদগুলো নার্সদের জন্য। কিন্তু এই জায়গাগুলো আমলারা, প্রশাসন ক্যাডারের লোকজন দখল করে রেখেছেন। নার্সিং কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদটিও তাদের দখলে। আমাদের দাবি হচ্ছে, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এবং নার্সিং কাউন্সিল থেকে প্রশাসনিক ক্যাডারদের অপসারণ করে নার্সদের পদায়ন করতে হবে।
কর্মসূচি প্রসঙ্গে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি সংস্কার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. শরিফুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের সর্বস্তরের নার্সদের এক দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের সব হাসপাতাল ও নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা এক দফা দাবি দাবিতে কর্মসূচি পালন করছি। আমরা চাই নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ও রেজিস্ট্রার পদ থেকে প্রশাসন ক্যাডার সার্ভিস কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে উক্ত পদগুলোতে উচ্চ শিক্ষিত, দক্ষ ও অভিজ্ঞ নার্সদের পদায়ন করতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা তাদের এক দফা দাবি পূরণের জন্য কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। আন্দোলনকারী নার্সরা জানান, আগে এই দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও ১২ সেপ্টেম্বর পুনরায় একজন নন-নার্স প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে রেজিস্ট্রার পদে পদায়ন করা হয়েছে, যা নার্সদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে নার্সদের অভাবে রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হতে পারে, যা দেশের সার্বিক স্বাস্থ্যখাতের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় দেখে আনতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাকসুরা নূর নার্সদের পেশাকে নিয়ে কটূক্তি করেন। যেখানে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা প্রদানকে ‘ভুল’ বলে উল্লেখ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু হয় নার্সদের।