Connect with us

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন

দাঁত ও মাড়ির সুস্থতায় যা করবেন

Published

on

দাঁত এবং মাড়িকে সুস্থ রাখতে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলা জরুরি। দিনে দুবার ব্রাশ করা এবং নিয়মিত দাঁতের চেকআপ করার মতো অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।

অনেকেই দাঁতের ক্যাভিটি ও মাড়ির যত্ন নিয়েই ভাবেন।তাদের জন্য বলছি ক্যাভিটি ও মাড়ির রোগের চেয়ে মুখ গহ্বরের যত্নও জরুরী।গবেষণায় দেখা গেছে যে কোনও ব্যক্তির মুখের স্বাস্থ্য এবং তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের মধ্যে একটি মিল রয়েছে। মুখের ভেতরের স্বাস্থ্য সমস্যাকে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যের বোঝা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

চিকিত্সা ছাড়া দাঁতের ক্ষয় বা মাড়ির সমস্যা, ব্যথা,দাঁত পড়ে যাওয়া এমনকি আত্মবিশ্বাসের সংকটও তৈরি হতে পারে। এই সমস্যাগুলো অপুষ্টি,কথা বলার সমস্যা সহ আপনার জীবনকে চ্যালেঞ্জের মুখে নিয়ে যেতে পারে।

সুতরাং নিয়মিত দাঁতের যত্ন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ এই দুটো আপনার সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করতে পারে। কিছু সুঅভ্যাস গড়ে তুললে আপনার দাঁত এবং মাড়িকে স্বাস্থ্যকর রাখতে পারেন।

নিয়মিত ব্রাশ করুন
দিনে দুবার ব্রাশ করার মাধ্যমে প্লাগ ও ব্যাকটেরিয়া দূর করা এবং দাঁত ধবধবে সাদা রাখতে বেশিরভাগই মানুষই সচেতন। তবে, এজন্য ব্রাশ করার সঠিক কৌশলটি ব্যবহার করতে হবে।
এক্ষেত্রে ছোট ছোট বৃত্তাকার করে ধীরে ব্রাশ করা উচিত, প্রতিটি দাঁতের সামনে, পিছনে এবং উপরের অংশটি ব্রাশ করা উচিত। এই প্রক্রিয়াটি ২ থেকে ৩ মিনিট সময় নিয়ে করা উচিৎ।
খুব শক্তভাবে ব্রাশ করা বা শক্ত ব্লিসেলযুক্ত টুথব্রাশ ব্যবহার করলে দাঁতের এনামেল এবং মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। এর প্রভাবগুলির মধ্যে দাঁত সংবেদনশীলতা, দাঁতে সুরক্ষিত এনামেলের স্থায়ী ক্ষতি এবং মাড়ির ক্ষয় পর্যন্ত হতে পারে।

Advertisement

ফ্লোরাইড ব্যবহার করুন
ফ্লোরাইড ফ্লোরিন নামক একটি উপাদান থেকে আসে। ফ্লোরাইড মুখগহ্বরের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে । ফ্লোরাইড টুথপেস্ট এবং মাউথওয়াশের একটি সাধারণ উপাদান।ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট এবং ফ্লস ব্যবহারে ক্যাভিটি প্রতিরোধ হতে পারে।

ফ্লসিং দিনে একবার
ফ্লসিং দাঁতের প্লাক এবং ব্যাকটেরিয়া সরিয়ে ফেলতে পারে, যেখানে ব্রাশ পৌঁছাতে অক্ষম। দাঁতে মধ্যে আটকে থাকা যেকোনো কিছু এবং খাবারের অংশ সরিয়ে দুর্গন্ধ রোধেও সহায়তা করে।

নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
আমাদের দেশে সাধারণত দাঁত ব্যথা বা খুব সমস্যায় না পড়লে চিকিৎসকের কাছে কেউ আসেন না।এটি ঠিক নয়।ছয় মাসে একবার আর তা সম্ভব না হলে বছরে অন্তত একবার একজন দন্ত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ। স্কেলিংএর মাধ্যমে দাঁত থেকে টার্টার বা প্লাক সরিয়ে ফেলা সম্ভব।দাঁত ব্রাশের সময় যে অংশটি বার বার মিস হয় সে অংশটিও পরিষ্কার করা সম্ভব স্কেলিংএর মাধ্যম।নিয়মিত চেক-আপের মাধ্যমে মাড়ির রোগ ও দাঁতের বিভিন্ন সমস্যায় প্রাথমিক
লক্ষণগুলো সনাক্ত করা যেতে পারে।প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করতে পারলে গুরুতর সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

ধূমপান করবেন না
ধূমপান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, ধূমপান মাড়ির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ধূমপানে দাঁত এবং জিহ্বা হলুদ হতে থাকে এবং নি:শ্বাসকে দুর্গন্ধযুক্ত করে তোলে। জর্দা বা তামাক জাতীয় সেবন দাঁত ও মাড়ির জন্য খুবই ক্ষতিকর।এতে মুখ ও জিহ্বায় ক্যান্সারের মত মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে।

মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন
দিনে কয়েকবার মুখ ধোয়া বা কুলি করা মুখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ক্লোরহেক্সিডিনযুক্ত মাউথওয়াশ মুখগহ্বরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস করে দাঁত এবং মাড়িকে সুস্থ রাখে।তবে,টানা ব্যবহার না করে এক থেকে দু’সপ্তাহ ব্যাবহার করতে হবে,অন্তত তিন মাসের ব্যবধানে আবার ব্যবহার করা যেতে পারে।মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে দুর্গন্ধযুক্ত নি:শ্বাস এবং দাঁতের সমস্যা কাঁটাতে সহায়তা করতে পারে ।

Advertisement

মিষ্টি জাতীয় খাবারে সতর্ক হোন
মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং স্টিকি ফুড বা আঠালো জাতীয় খাবার দাঁতে ক্যাভিটি হতে সহায়তা করে।ক্যান্ডি বা মিষ্টিতে চিনি থাকায় এগুলো কম খাওয়াই ভালো। ডব্লিউএইচও এর মতে, প্রতিদিনের ক্যালোরির ১০ শতাংশের নিচে চিনি গ্রহণ সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। গবেষণায় উঠে এসেছে, ক্যালোরির পাঁচ শতাংশে চিনি নামিয়ে আনলে ক্যাভিটি এবং দাঁতের অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকি আরও কমে যায়।কোল্ড ড্রিংকস, প্যাকেটজাত জুস এগুলো সীমিত করে খেলেই ভালো।

এমন কিছু নিয়মের মধ্য দিয়ে চললে আপনার দাঁতের সমস্যা অনেক কমে যাবে।

লেখক: ডা. শারমীন জামান
বিডিএস, পিজিটি (ওরাল এন্ড মেক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি)
ওরাল এন্ড ডেন্টাল সার্জন, ফরাজী ডেন্টাল হসপিটাল এন্ড রিসার্স সেন্টার।

Advertisement
জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন4 weeks ago

ওষুধ খাওয়ার ভুলে অসুস্থতা

জ্বর বা মাথাব্যথা হলেই প্যারাসিটামল, অ্যালার্জির জন্য হিস্টাসিন কিংবা গ্যাসের ট্যাবলেট- এই ধরনের ওষুধগুলো আমরা হরহামেশাই খাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই।...

খাদ্য ও পুষ্টি1 month ago

শিশুদের জন্য লবণ যতটুকু দরকার

অতিরিক্ত লবণ শিশুর বৃদ্ধিতে বাধা প্রদানের পাশাপাশি অল্প বয়সে রক্তচাপের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। খাদ্যাভ্যাসে এমন পরিমাণ লবণ রাখতে হবে যা...

জেনে রাখুন, সুস্থ থাকুন1 month ago

ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কেন

বয়সে টিংকু বেশ ছোট। এত ছোট যে মাঝেমধ্যে টিংকুর দাঁত পড়ে। একবার বিড়াল টিংকুকে আঁচড়ে দিল। চিকিৎসক বললেন যে র‌্যাবিসের...

Advertisement