বাংলাদেশের ২ কোটিরও বেশি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। তবে এ চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় ১০ শতাংশ রোগীও তা চালিয়ে যেতে পারেন না। ফলে অর্থাভাবে কিডনি রোগীর ৯০ শতাংশই মারা যান বিনাচিকিৎসায়।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) এর আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বিআরবি হাসপাতালের কিডনি বিভাগের চিফ কনসালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. এমএ সামাদ।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগের প্রকোপ বাড়ছে। বতর্মানে ৮৫ কোটি মানুষ এ রোগে ভুগছেন। আর প্রতি বছর ৪১ লাখ মানুষ কিডনি রোগে মারা যান। তবে একটু সচেতন হলে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশই প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ জন্য প্রাথমিক অবস্থায় তা শনাক্ত করে চিকিৎসা নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিডনি রোগের প্রধান কারণ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল। এসব রোগের ওষুধ গরিবদের জন্য বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য সরকারে কাছে দাবি জানাচ্ছি। আর কিডনি বিকলের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় তা বহনে গরিবদের জন্য ভর্তুকি প্রদানসহ সবাইকে স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আনা দরকার। এ ছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান না করা, পরিমিত সুষম খাবার খাওয়া, কাঁচা লবণ পরিহার করে সুস্থ জীবনধারা চর্চা জরুরি।’
কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘উন্নত দেশে মোট কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে হয়। অথচ বাংলাদেশে শতভাগই নিকটাত্মীয়দের মধ্য থেকে ডোনার হওয়ার আইন রয়েছে, যা পরিবর্তন দরকার। দুর্ঘটনায় বা অকালে এবং রোগ-শোকে মৃত্যুবরণকরীদের কিডনিগুলো সংগ্রহ করে বিকল রোগীদের সংযোজন করতে পারলে কিডনি চিকিৎসায় অনেক অগ্রগতি হবে। এখন বছরে ২০০ থেকে ২৫০ কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হয়। মৃত ব্যক্তিদের কিডনি সংগ্রহ করে জীবিত রোগীদের সংযোজন করা গেলে সেটা দেড় থেকে দুই হাজারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’
বৈঠকে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. রফিকুল আলম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের য্গ্মু সচিব মো. সাইফুল্লাহিল আজম, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, হলি ফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মেজর জেনারেল অধ্যাপক ডা. এইচআর হারুন, ক্রিকেটার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও চলচ্চিত্র অভিনেতা মো. নিরব হোসেন।