Connect with us

প্রধান খবর

অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ‘উদ্বেগজনক’, সমন্বিত পদক্ষেপের পরামর্শ

Published

on

বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। নবজাতক থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক– সব বয়সী রোগীর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার ব্যাপক উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য ভয়াবহ সংকেত বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ কার্যকর রাখতে এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভয়াবহ সংকটে পড়বে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর আইসিডিডিআর,বিতে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলা: আর্চ গবেষণার ফলাফল’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার, হাসপাতালের সংক্রমণ এবং জনসচেতনতার ঘাটতি একত্রে পরিস্থিতি জটিল করছে। তারা অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ, কঠোর নীতি বাস্তবায়ন এবং জনগণকে সচেতন করার উপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, আমি এ গবেষণার ফলাফলগুলোকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং একই সঙ্গে মূল্যবান হিসেবে দেখছি। এগুলো আমাদের কৌশল ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থাকে আরও সূক্ষ্মভাবে সাজাতে সাহায্য করবে।

Advertisement

তিনি আরও যোগ করেন, আমরা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঘুমের ওষুধ বিক্রি নিয়ন্ত্রণে আনার মতোই অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রিতেও কঠোর নীতি প্রণয়ন জরুরি। তার মতে, এটি একটি বহু-খাতীয় সমস্যা যার সমাধান সমন্বিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাভিত্তিক পদক্ষেপ ছাড়া সম্ভব নয়।

ইউএস সিডিসির ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ব্রায়ান হুইলার বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ একটি বৈশ্বিক সংকট এবং এর সমাধান বহুমাত্রিক। তিনি সতর্ক করেন, প্রতিটি সমাধানেরই একটি খরচ আছে, যা এটিকে কেবল বৈজ্ঞানিক নয়, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ও নীতির বিষয়েও রূপ দিয়েছে।

এছাড়া আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা শিরিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ সায়িদুল হক এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানীও বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, হাসপাতাল-সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি শক্তিশালীকরণ এবং যুক্তিসংগত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের বিষয়ে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক, হাসপাতাল ব্যবস্থাপক ও উন্নয়ন সহযোগীরা অংশ নেন। আলোচনায় উঠে আসে—শুধু চিকিৎসক নয়, রোগী ও সমাজকেও সচেতন হতে হবে, কারণ অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার ঠেকানো এখন জাতীয় ও বৈশ্বিক অগ্রাধিকার।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement