যোনির সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে যে হাইজিন মেন্টেন করা জরুরি, সে কথা আমাদের অজানা নয়। কিন্তু তার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে গিয়ে নিয়মিত সাবান ব্যবহার করা কি ঠিক? এই প্রশ্নের উত্তর জানেন না অধিকাংশ মহিলাই। তাই নানারকম সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। আপনার ক্ষেত্রেও বিষয়টি তাই নয় তো? তাহলে আর দেরি না করে ঝটপট জেনে নিন গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করার সঠিক নিয়ম।
শরীরের অন্যান্য় অংশের ত্বকের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি যোনির সুস্বাস্থ্য বজায় রাখাও জরুরি। তাই তো সব সময়ে চিকিৎসকেরা গোপানাঙ্গের ত্বকের যত্ন নেওয়ার পরামর্শও দেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যোনির বাইরের অংশের ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ঠিক কী কী করা উচিত? এর উত্তর জানেন না অধিকাংশ মহিলাই।
তাই তো অনেকেই হাইজিন বজায় রাখতে গিয়ে নিয়মিত গোপনাঙ্গে সাবান ব্যবহার করেন। কেউ কেউ তো ভিতরেও সাবান লাগানো থেকে বিরত থাকেন না। কিন্তু এতে আদৌ উপকার হয় নাকি ক্ষতির আশঙ্কাই বাড়ে? সেই তথ্য খতিয়ে দেখলাম আমরা।
পরিষ্কার করা আদৌ প্রয়োজন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, যোনি সেলফ ক্লিনিং অর্থাৎ এটি নিজেকেই নিজে পরিষ্কার করে নিতে পারে। তাই প্রতিদিন বারবার সেই অংশটি ঘষে ঘষে পরিষ্কার করার কোনও প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া এই অংশের একটি নির্দিষ্ট পিএইচ মাত্রাও রয়েছে। বারবার সেই অংশ পরিষ্কার করলে পিএইচ-এর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই যোনির ভিতরের অংশ বারবার ক্লিনজিং না করাই শ্রেয়।
কোন অংশগুলি ক্লিনজিং বা পরিষ্কার করা জরুরি
আপনি বাইরের অংশগুলি ক্লিনজিং করতেই পারেন। যেমন ধরুন ক্লিটোরিস এবং ল্যাবিয়াকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখলে গোপনাঙ্গের সুস্বাস্থ্য়ও বজায় থাকবে। তবে এক্ষেত্রে ভুলেও সাবান ব্যবহার করবেন না। তাহলেই কিন্তু ক্ষতির আশঙ্কা বাড়বে! এমনকী সংক্রমণ পর্যন্ত হতে পারে।
কী ভাবে যোনি পরিষ্কার রাখবেন
ভালভা ক্লিনজিং করার জন্যে ইষদুষ্ণ গরম জলই যথেষ্ট। তাই একটি পাত্রে পরিমাণ মতো গরম জল নিন। একটি সুতির কাপড় গরম জলে ভিজিয়ে আপনার যোনির চারধার ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। একইসঙ্গে ল্যাবিয়া এবং ক্লিটোরিসের অংশও মুছুন। তারপরে শুকনো কাপড় দিয়ে আরও একবার মুছে নিন। দিনে দুই থেকে তিনবার এই নিয়মে ক্লিনজিং করলেই গোপনাঙ্গের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে।
সাবান কি ক্ষতিকারক?
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, কোনও সুগন্ধি সাবান বা বাজারচলতি ভ্যাজাইনাল সোপ ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন নেই। এই প্রবন্ধে আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, যোনি নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে পারে, তাই সেখানে বারবার সাবান দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া যোনিপথে প্রচুর ‘ভালো ব্যাকটেরিয়া’ থাকে, যেগুলি আপনার গোপনাঙ্গের ভিতরে পিএইচ-এর মাত্রা ঠিক রাখে। আর সাবান দিলে এই সিস্টেমটাই নষ্ট হয়ে যায়।
সুগন্ধি ব্যবহার করা ঠিক?
প্রত্যেকের যোনিরই এক অনন্য গন্ধ রয়েছে। এই গন্ধকে খারাপ বলে ধরে নেওয়ার কোনও অর্থ নেই। আর সেখানে সুগন্ধ বজায় রাখার জন্যে নানারকম সুগন্ধি ব্যবহারেরও কোনও প্রয়োজন নেই। তাই এই প্রাকৃতিক বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
আসলে সাবান বা বাজারচলতি বিভিন্ন সুগন্ধি ব্য়বহার করলে যোনির পিএইচ-এর মাত্রার হেরফের হবে। ফলে সেখানে চুলকানি, ব়্যাশ হতে পারে। এমনকী জ্বালাও করতে পারে। সেই সঙ্গে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে নানা সংক্রমণ।
প্রসঙ্গত, আপনার যোনি স্রাবে যদি খারাপ গন্ধ হয় কিংবা গোপনাঙ্গের ভিতরে সব সময়ে জ্বালা-চুলকানি হতে থাকে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।