বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তদারকি ডিসিসির দৈনন্দিন কাজ। তার পরও ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রতিবছরই আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়ে থাকি। এবারও মহানগরীতে প্রচুর কোরবানি হবে। কোরবানির বর্জ্য যত্রতত্র পড়ে থাকলে দু-একদিন পর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাতে পারে। তাই নগরী পুরোপুরি পরিষ্কার রাখার জন্য আমরা বেশ কিছু বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
এর মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল হয়েছে। আছে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা, হাতগাড়ি সরবরাহ ও হাতগাড়ি সুষ্ঠুভাবে বিতরণ, ঢাকা ওয়াসা ও ফায়ার সার্ভিসের পানির গাড়ি ব্যবস্থা। পরিছন্নতা কাজের অগ্রিম টাকা দেওয়া হবে। হাট পরিষ্কার-পরিছন্নতার কাজে চাঁদরাতসহ ঈদের দিন ১৩৭টি গাড়ি সরবরাহ করা হবে, ঈদের আগের দিন থাকবে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা। জুমার নামাজ ও ঈদের নামাজের মোনাজাতের আগে মুসলি্লদের উদ্দেশে ইমাম সাহেবদের মাধ্যমেও প্রচারণা চালানো হবে। কোরবানি হাটের জন্য ছয়টি পে-লোডার, দুটি টায়ারডোজার, ২০টি ডাম্পার, পাঁচটি ট্রেইলর, দুটি প্রাইম মোভার ও সাতটি পানির গাড়ি (পাইপযুক্ত) সরবরাহের ব্যবস্থা আছে। কোরবানি বর্জ্যের দুর্গন্ধ বা রোগজীবাণুর বিস্তার রোধে স্যাভলন মিশ্রিত পানি স্প্রে-করণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবছরই অবৈধ হাটের আবর্জনা বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে। এ জন্য অবৈধ হাট বসানো বন্ধ করা জরুরি। এ ছাড়া ইজারার নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া কোরবানির পশু অন্যত্র না বাঁধার জন্য আহ্বান থাকবে। কোরবানির পর চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করার চেষ্টা করব। তারা যেন চামড়া থেকে আলাদা করা উচ্ছিষ্টাংশ যথাযথ স্থানে ফেলে। যেখানে আমাদের পানির গাড়ি পেঁৗছাতে পারে না, সেখানে ট্যাংকের মাধ্যমে পানি পেঁৗছে দেব। এ ছাড়া আমাদের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে আঞ্চলিক প্রতিনিধিরাও সক্রিয় থাকবেন। এবার মহানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজের তাদারকির জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহকে আহ্বায়ক ও যান্ত্রিক বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী লে. কর্নেল শামীম আহম্মেদকে কো-আহ্বায়ক করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করছি এবার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
তবে এ ব্যাপারে নগরবাসীকে অন্তত সাতটি বিষয়ে আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিষয়গুলো হলো :
১. কোরবানির পশু রাখার স্থানের যাবতীয় খড়কুটা, ময়লা-আর্বজনা, গোবর পরিষ্কার করে নিকটস্থ ডাস্টবিনে ফেলুন। ২. জবাইকৃত পশুর গোবর ও উচ্ছিষ্টাংশ অবশ্যই নিকটস্থ ডাস্টবিনে ফেলবেন। ৩. কাঁচা মাটিতে গর্ত করে সেই গর্তের পাশে পশু জবাই করুন। পশুর রক্ত ও উচ্ছিষ্টাংশ মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলুন। ৪. পাকা স্থানে জবাইকৃত পশুর রক্ত স্যাভলনযুক্ত পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। ৫. গোবরসহ কোনো ধরনের উচ্ছিষ্ট কোনো অবস্থায়ই ড্রেনে ফেলবেন না। ৬. পশু জবাইয়ের স্থান ও আশপাশে বি্লচিং পাউডার ছিটিয়ে রোগজীবাণু বিস্তার রোধে আমাদের সহায়তা করুন। ৭. কোরবানি করার জন্য কাঁচা জায়গা না থাকলে ড্রেনের কাছে কোরবানি করুন।