ডিপ্রেশনের সাধারণত প্রাথমিক তিনটি টাইপ দেখা যায়। এগুলো হলো—
মেজর ডিপ্রেশন
— এটি প্রায় ‘ফ্লু’র মতো।
— এটি প্রায়ই কয়েক মাস অব্যাহত থাকে।
— চিকিত্সা না করালে এটি আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
— প্রতিটি পুনরাক্রমণ অনেক দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবণতা দেখা দেয়।
— পুনরায় আক্রমণ রোগীকে আগের থেকে বেশি মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়, অসুস্থ করে দেয়।
ক্রনিক ডিপ্রেশন
— ক্রনিক ডিপ্রেশন হলো হালকা মাত্রার বা Low-grade type.
— এটি দীর্ঘমেয়াদি ডিপ্রেশন (Long-term depression).
— এ ধরনের ডিপ্রেশন বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত চলতে থাকে।
— কিছু কিছু মানুষ তাদের জীবনের অসহনীয় ঘটনার ফলস্বরূপ এটিতে আক্রান্ত হতে পারে।
— এই Long-term, Low-grade type dys ডিপ্রেশনকে ডিসথেইমিয়াও (Dysthymia) বলা হয়। Dys-এর অর্থ হলো গোলযোগ এবং ঞযুসরধ ব্যবহার করা হয় মুড বোঝাতে। তাহলে Dysthymia’র অর্থ হলো মুডের গোলযোগ বা Disorder of one’s mood.
ম্যানিক ডিপ্রেশন
— ডিপ্রেশন কমে কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তা পরিবর্তিত হয়ে ম্যানিয়ায় রূপ নেয়।
— একশ’জনের মধ্যে প্রায় একজন তাদের জীবনে ম্যানিক ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়।
— এ মানসিক অবস্থা বা রোগটি যে কোনো বয়স বা সময়েই আরম্ভ হতে পারে।
— নারী-পুরুষ উভয়েরই এটি হতে পারে।
— গবেষণায় লক্ষ্য করা গেছে যে, ম্যানিক ডিপ্রেশন পরিবারের অন্য সদস্যদের মাঝেও দেখা যায়।
— এ মানসিক রোগটি ‘জিনগত’ কারণেও সংঘটিত হয়ে থাকে।
— এ রোগ রোগীর জন্য দারুণ ভোগান্তির সৃষ্টি করে।
— এ রোগের এপিসোড মাঝেমধ্যে স্ট্রেস ও শারীরিক রোগ-বালাইয়ের প্রকাশ ঘটায়।
— ম্যানিক ডিপ্রেশনে রোগীর ডিপ্রেসিভ অনুভূতিগুলো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে থাকে।
— এ ধরনের ডিপ্রেশন মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্ম জটিল করে তোলে।
— এ ধরনের ডিপ্রেশন অনেক সময় দৈহিক বিভিন্ন সমস্যার প্রকাশ ঘটায়।
— ম্যানিক ডিপ্রেশন হলে রোগীর মাঝে দেখা দেয় অকারণ অনুপ্রেরণা, মাত্রাতিরিক্ত সুখের দোলা।
যুক্তিহীনভাবে রোগীর মাঝে দেখা দেয় কর্তৃত্বময়, অহংবোধ, বাড়াবাড়ি।
— মাঝে মাঝে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপও প্রকাশ পেতে দেখা যায়।
— এ রোগটি ম্যানিক ডিপ্রেশন ছাড়াও বাইপোলার ডিসঅর্ডার নামে পরিচিত।
— এ রোগে রোগীর আবেগের ওঠানামা করে।
— রোগীর মন দ্রুত বদলায়।
— রোগীর চিন্তাভাবনা চটজলদি পরিবর্তিত হয়।
— যত যাই হোক না কেন, ম্যানিক ডিপ্রেশনের এমন চিকিত্সা রয়েছে যার ফলে রোগীর রোগের তীব্র আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় বহুলাংশে।
— আপনারা যে কোনো টাইপের ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হন না কেন, প্রতিটি টাইপেরই আধুনিকতম চিকিত্সা রয়েছে। তবে এ চিকিত্সা গ্রহণ করার জন্য আপনাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
রোগ হলে তো তার চিকিত্সা করতেই হবে—এটাই সত্য, এটাই সচেতনতা।