রসুন আপাতদৃষ্টিতে আমাদের কাছে এক ধরনের প্রয়োজনীয় মসলা হলেও এটি অতি দরকারি একটি ভেষজ উপাদান। প্রতিদিন মাত্র দুই কোয়া রসুন মানবদেহের প্রায় অর্ধশত সমস্যার সমাধান করতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, কাঁচা রসুন সুস্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী। নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দূর করতে কাঁচা রসুনের জুড়ি নেই। ইউনিভার্সিটি অব হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল সায়েন্সের গবেষণায় রসুনের এসব গুণ প্রকাশ পায়।
হৃৎপিণ্ডের সুস্থতায় রসুন বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে। আবার কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে। এতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। শিরা-উপশিরায় প্লাক জমতে বাধা দেয়। রক্ষা করে শিরা-উপশিরায় মেদ জমার মারাত্মক রোগ অথেরোসেক্লরোসিসের হাত থেকে। এটি উচ্চরক্তচাপের সমস্যাও দূর করে।গিঁটবাতের সমস্যা থেকে রক্ষা করে। ফ্লু এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান দেহে খারাপ ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ, জন্ম এবং বংশবিস্তারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। যক্ষ্ণা রোগ নিরাময়েও রসুন বিশেষ ভূমিকা রাখে। রসুন হজমশক্তি বাড়ায় ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। গলব্লাডার ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। রেক্টাল ক্যান্সারের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। কাঁচা রসুন পরিপাকতন্ত্রের নানা সমস্যা দূর করে।
আমাদের শিরা-উপশিরায় জমাটবাঁধা রক্ত ছাড়াতে সহায়তা করে। হাত-পায়ের জয়েন্টের ব্যথা দূর করে এবং বাতের ব্যথা সারায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। রসুনের ফাইটোনসাইড অ্যাজমা সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। দীর্ঘমেয়াদি হুপিং কাশি ও ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ঘুম না হওয়া বা অনিদ্রা রোগ থেকে মুক্ত রাখে। ত্বকের বার্ধক্যজনিত টিস্যুগুলো অটুট রাখে। সর্বোপরি প্রতিদিন সকালে নিয়মিত দুই কোয়া রসুন খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়।
রসুন খাড়া ধরনের বিরুৎ গাছ। কাণ্ড খাটো। পাতা সরল, দীর্ঘ, প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার লম্বা। সলিড স্কেপে সবুজাভ-সাদা রঙের ফুল হয়। ফলে বীজ থাকে না। প্রধানত রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। রসুন কোলেস্টেরল (চর্বি) এবং উচ্চরক্তচাপ কমায়। ক্লোভস (ঈষড়াবং) থেকে চারা। জন্মস্থান মধ্য এশিয়া। তবে দিনে দুই কোয়ার বেশি কাঁচা রসুন খাওয়া যাবে না।