তিন মাস প্রতিদিন ৮৫০ ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলে এবং তাতে ওজন কমাতে পারলে অন্তত দুই বছর টাইপ-টু ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। ইংল্যান্ডে বেশ কিছু রোগীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলে জানানো হয়েছে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে।
তারা বলছেন, ডায়াবেটিসের জন্য নিয়মিত ওষুধ খাওয়া বন্ধ রাখতে এবং রোগ ঠেকিয়ে রাখতে এই পদ্ধতি একটা সমাধানের পথ। আগে ধারণা করা হতো টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে সেই রোগে সারা জীবন ভুগতে হবে এবং দিনে দিনে তা আরও খারাপের দিকে যাবে। নতুন গবেষণা সেই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছে।
স্কটল্যান্ডে ১৪৯ জন ১২ থেকে ৩০ সপ্তাহ কম ক্যালরির খাবার খাওয়ার এক কর্মসূচিতে অংশ নেন। ওজন কমানোর জন্য তাদের কম ক্যালরির শুধু তরল খাবার এবং পানীয় খেতে হতো। ওজন কমার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের ধীরে ধীরে আবার সাধারণ খাবার খেতে দেয়া হয়। এক বছর পর এদের মধ্যে ৬৯ জন রোগমুক্ত হন। মাত্র ৪ শতাংশ রোগীকে শর্করা কমাতে ওষুধের সাহায্য নিতে হয়। আর দু’বছর পর এদের মধ্যে ৫৩ জন রোগমুক্ত থেকে যান এবং তাদের কোনোরকম ওষুধ খেতে হয় না।
এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত একজন অধ্যাপক রয় টেইলর বলছেন, এই ফলাফল ডায়াবেটিনে আক্রান্ত রোগীদের জন্য খুবই আশাব্যঞ্জক। এতদিন মনে করা হতো টাইপ-টু ডায়াবেটিস একবার ধরলে আর ফেরার পথ নেই, সেই যুগের ওপর এবার যবনিকা ফেলার পথ খুলে গেছে।’
তারা বলছেন, যারা ওজন কমিয়ে এই রোগ ঠেকানোর কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তারা গড়ে ১০ কেজির মতো ওজন কমিয়েছেন এবং তা ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন।
কিন্তু লন্ডনে কিংস কলেজের ড. নিকোলা গেস বলছেন ওজন কমানোটাই যে একমাত্র পথ তা এখুনি বলা যাবে না। কারণ, খুব কম সংখ্যক হলেও কয়েকজন রোগীর ক্ষেত্রে এই রোগ আবার ফিরে এসেছে। সেটা কেন হয়েছে তা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন। হয়তো এমনটা হয়ে থাকতে পারে, ওজন কমানো তাদের জন্য একশভাগ করেনি যারা টাইপ-টু ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন অনেকদিন ধরে অথবা তাদের বংশগত জিন এক্ষেত্রে একটা ভূমিকা রেখেছে।