১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সের নারীদের মধ্যে এইচআইভি/এইডস সংক্রমণের ঝুঁকি অন্য যেকোনো বয়সের নারীর চেয়ে আট গুণ বেশি। এটি বিশ্বের সব জায়গাতেই প্রযোজ্য। জাতিসংঘের এইডস-বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইডস) এদেশীয় সমন্বয়ক সলিল পানাকাডান গতকাল বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। এইডসবিষয়ক ২০১০ সালের জাতিসংঘের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তিনি এ কথা বলেন।
নারী, বালিকা ও জেন্ডার-সমতার বিষয়ে ইউএনএইডসের কর্মসূচি প্রকাশ করার লক্ষ্যে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচির মূল কথা হলো এইডসের বিষয়ে নারীদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। নারীর প্রতি যৌন ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। কারণ, এই বিষয়গুলো এইডসের ঝুঁকি বাড়ায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শিরিন শারমিন বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার কারণে অনেকের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে। নারীর প্রতি জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ করতে সরকারের পক্ষ থেকে তিনি সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতিসংঘের এদেশীয় সমন্বয়ক আর্থার আরকেন। তিনি নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
সলিল পানাকাডান বলেন, বাংলাদেশে জেন্ডার অসমতা ও সহিংসতার বিষয়টি অনেক গভীরে প্রোথিত। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এটি চলে আসছে। এ কারণে মেয়েরা নিজেদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে মেনে নেয়। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হলে এইডসের ঝুঁকি কমবে।
অনুষ্ঠানে নারীর প্রতি যৌন ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ করা এবং এইচআইভি/এইডস কীভাবে ছড়ায়, কীভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখা যায় ইত্যাদি বার্তা নিয়ে ‘পট গান’ পরিবেশন করেন রূপান্তর নামের একটি এনজিওর কর্মীরা।
মিলনায়তনের বাইরে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের চত্বরে আয়োজন করা হয় ‘নলেজ ফেয়ার’। সেখানে বিভিন্ন স্টলে এইচআইভি/এইডস, জেন্ডার-সমতা, জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বিভিন্ন বই, প্রতিবেদন প্রদর্শন করা হয়।
বিকেলে চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আঁকা এইডসের পরিপ্রেক্ষিতে নারীর প্রতি সহিংসতাবিষয়ক বিভিন্ন ছবি প্রদর্শনীতে স্থান পায়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।