ই-হেলথটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি
ঢাকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ অনিরাময়যোগ্য রোগীর প্রশমন সেবা জরুরি। প্রতি বছর আরও প্রায় এক লাখ নতুন রোগী এর আওতায় আসছে। হিসাব মতে, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের এক লাখ মারা যাচ্ছেন প্রশমন সেবা না পেয়ে।
কিন্তু প্রশমন সেবার দিক থেকে বাংলাদেশ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা কাজ করলেও তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। নেই জাতীয় নীতিমালা।
রোববার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে প্রশমন সেবার উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।
গোলটেবিলে অংশ নেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. মাগদুমা নার্গিস, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম পরিচালক অধ্যাপক ডা. এরিক ক্রকার, বিএসএমএমইউ প্রশমন সেবা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নিজামুদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশ প্রশমন সেবা সংস্থার সভাপতি ডা. রোমানা দৌলা প্রমুখ।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে প্রশমন সেবা নিশ্চিত করতে চারটি মূল বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে নীতিমালা দরকার। প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের প্রশিক্ষণ এবং নীতিমালার বাস্তবায়ন।
প্রশমন সেবা কমিউনিটি ও গৃহ পর্যায়ে নিশ্চিত করতে হবে বলে মত দেন বক্তারা।
ডা. মাগদুমা নার্গিস বলেন, ‘প্রশমন সেবা স্বাস্থ্য সেবার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়া উচিত। বাংলাদেশে গরীব ও মধ্যবিত্তরা বেশি ভুগছে। কিন্তু তাদের আরামদায়ক ও শান্তিময় মৃত্যু নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।’
ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘অনিরাময় যোগ্য রোগীর সংখ্যা দরিদ্র্য দেশগুলোতে বেশি। তাই প্রশমন সেবা গৃহ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য এই সেবাকে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করা উচিত। তবে কোনোভাবেই বাণিজ্যিকিকরণ করা যাবে না।’
ডা. এরিক ক্রকার তার মূল প্রবন্ধে বলেন, ‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তা বিশ্লেষণ করতে হবে। সে মোতাবেক নীতিমালা দরকার।’
বিভিন্ন দেশগুলোর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রায় সব দেশেই কমিউনিটি ও গৃহ পর্যায়ে প্রশমন সেবা সফল হয়েছে।’
তবে দরিদ্র্য দেশগুলোতে এই সমস্যা প্রকট বলে মনে করেন এরিক।
অধ্যাপক ডা. নিজামুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রশমন সেবা একদম শিশু। কোনো ব্যক্তির প্রশমন সেবা নিশ্চিত করতে তার শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।’
গোলটেবিলের আয়োজন করে যৌথভাবে বিএসএমএমইউ প্রশমন সেবা কেন্দ্র ও বাংলাদেশ প্রশমন ও সেবা সংস্থা।
সুত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম