জুভেনাইল ডায়াবেটিস দুই ধরনের হতে পারে। যেমন : টাইপ ওয়ান অর্থাৎ ইনসুলিননির্ভর ও টাইপ টু ইনসুলিন অনির্ভর। বাংলাদেশে ইনসুলিননির্ভরশীল আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশি।
জুভেনাইল ডায়াবেটিসের লক্ষণ
– বারবার বাথরুম পায়।
– খুব পানির পিপাসা পায়।
– প্রচণ্ড খিদে পায়।
– কারণ ছাড়াই ওজন কমতে শুরু করে।
– ক্লান্তি, অবসাদ ও অবসন্নভাব।
– রাতে বিছানা ভেজায়।
– দেখতে অসুবিধা হয়।
– নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
যেসব কারণে হয়
– অগ্ন্যাশয়ের যেসব সেলে ইনসুলিন তৈরি হয়, সেসব সেল কিছু কিছু ক্ষতিকারক ভাইরাসের কারণে নষ্ট হয়ে গেলে ইনসুলিন তৈরি হতে পারে না। এ ধরনের শিশুর টাইপ ওয়ান জুভেনাইল ডায়াবেটিস হতে পারে। মামস্, রুবেলা, ককজেকি_এসব ভাইরাসের কারণে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী সেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
– শিশু জন্মের প্রথম ছয় মাস মায়ের দুধ না খেলে।
– পরিবারের কারো ডায়াবেটিস থাকলে।
– টাইপ টু জুভেনাইল ডায়াবেটিস সবচেয়ে বেশি হতে পারে পরিবেশ দূষণ থেকে।
– শিশুকে ছোটাছুটি করে খেলতে না দিয়ে কেবল আবদ্ধ করে রাখলে শিশু মুটিয়ে গিয়ে টাইপ টু জুভেনাইল ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে।
– শিশুকে সুষম খাদ্য বিশেষ করে শাকসবজিতে অভ্যস্ত না করলে। ফাস্টফুড, চকোলেট, চিপস, আইসক্রিম ইত্যাদিতে অভ্যস্ত শিশুর টাইপ টু জুভেনাইল ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কি কি সমস্যা হতে পারে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে বিভিন্ন রোগ হতে পারে।
– ডায়াবিটিক রেটিনোপ্যাথি হতে পারে। শিশু অন্ধ পর্যন্ত হতে পারে।
– হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
– আলসার বা হজমের সমস্যা হতে পারে।
– কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সমাধান
– কি কারণে অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন সেল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তা বের করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
– শিশুকে যথাসময়ে মামস্, রুবেলা, ককজেকি ইত্যাদি ভাইরাসের টিকা দিয়ে দিতে হবে।
– শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
– শিশুকে যতটা সম্ভব দূষিত পরিবেশ থেকে দূরে রাখতে হবে।
– শিশুকে যতটা সম্ভব সুষম খাদ্যে অভ্যস্ত করতে হবে।
– যাতে মুটিয়ে না যায় সে জন্য শিশুকে খেলাধুলায় অভ্যস্ত করাতে হবে।
ডা. বেদৌরা জাবীন
পেডিয়াট্রিক ডায়াবেটোলজিস্ট
চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ইন চিলড্রেন প্রোগ্রাম, বারডেম কার্ডিয়াক