‘আমরা চাই বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক। এ দেশের মানুষের কম খরচে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত হোক। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে প্রচেষ্টা চালাবে- আমরা তার অংশীদার হতে চাই।’
কলকাতার ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্স’ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র কনসালটেন্ট- কার্ডিয়াক সার্জন ডা, কুণাল সরকার বৃহস্পতিবার ঢাকায় এভাবেই প্রত্যয়ের কথা জানান।
ডা. কুণাল সরকার বৃহস্পতিবার ঢাকা রিজেন্সি হোটেলে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে আরো বলেন, বাংলাদেশেও অনেক ভালো চিকিৎসক আছেন। তাদের কাছ থেকে রোগীরা উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন। আমরা তার পাশে থেকে এ সেবা আরো এগিয়ে নিতে চাই। এজন্যই আমি ঢাকা এসেছি। কেননা, সব মানুষের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার আছে।
তিনি বলেন, কলকাতার মুকুন্দপুরে অবস্থিত ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্স’ হাসপাতাল। এর চেয়ারম্যান হলেন খ্যাতনামা সার্জন ডা. দেবী শেঠ। এ ইনস্টিটিউটে প্রতিমাসে আড়াইশ রোগীর হার্ট সার্জারি হয়।
এরমধ্যে বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ জন।
ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম হার্ট সার্জারি ইনস্টিটিউট এটি। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান হাসপাতাল ব্যাঙ্গালোরের পরেই কলকাতার এ ইনস্টিটিউটের স্থান।
কলকাতা ও ব্যাঙ্গালোর ইনস্টিটিউট মিলিয়ে বেডের সংখ্যা দেড় হাজার। কলকাতা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ১৫ দিন আগে অ্যাপয়েনমেন্ট নিতে হয়।
ডা. কুণাল সরকার বুধবার সকালে ঢাকা আসেন। এদিনই তিনি সরাসরি চলে যান সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে। সাভার এনাম হাসপাতালে অচিরেই চালু হতে যাচ্ছে সার্জারি বিভাগ। এ উদ্যোগের অংশীদার হতেই বাংলাদেশে আগমন ডা. কুণাল সরকারের। কি কি ভাবে এনাম হাসপাতালকে সহযোগিতা দেওয়া যায়- মূলত এসব বিষয় নিয়েই তিনি আলোচনা করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলেই তিনি কলকাতায় ফিরে যান।
সাভার এনাম মেডিক্যাল হাসপাতালে আগামী মে মাসে চালু হতে যাচ্ছে ইন্টারভেনশন কার্ডিওলজি অ্যান্ড কার্ডিয়াক সার্জারি। এতে সার্বিক সহায়তার বিষয়ে এবার আলোচনা করেন কার্ডিয়াক সার্জন ডা. কুণাল সরকার।
তিনি বলেন, শুধু সফল সার্জারি হলেই চলবে না; এরসঙ্গে থাকতে হবে- ধৈর্য সহকারে রোগীর অসুবিধাগুলো শোনার জন্য চিকিৎসকসহ টেকনিশিয়ান, নার্স। তবেই না রোগী চিকিৎসাসেবার প্রতি আস্থা রাখবেন। মোট কথা থাকতে হবে পরিপূর্ণ চেইনিং ব্যবস্থা।
আমরা এসব সহযোগিতা দিয়ে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালটি পরিপূর্ণভাবে গড়ে তুলতে চাই। যা যা প্রয়োজন আমরা সব সাপোর্ট দেব। অর্থাৎ ২ বছরের মধ্যে এ হাসপাতালটিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে দেখতে চাই। যাতে করে বাংলাদেশের রোগীদের আর বিদেশ যাবার প্রয়োজন না পড়ে।
ডা. কুণাল সরকার বলেন, দেশেই মানুষ ভাল চিকিৎসা পেলে বিদেশ কেন যাবে? তাদের তো যাবার প্রয়োজন পড়বে না। আর বিদেশ যাবার কয়জনের বা সামর্থ্য আছে?
তিনি বলেন. কলকাতা ও ব্যাঙ্গালোরসহ সারা ভারতে আমরা ১৫টি হাসপাতাল চালু করতে যাচ্ছি। এগুলো হলো – হায়দ্রাবাদ, জয়পুর, কোলার ( মহিশুর), মাইশের, জামশেদপুর, শিলিগুড়ি, রায়পুর (ছত্রিশগড়), আহমেদাবাদ বিবিধ।
সরকার বলেন, আমরা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আমাদের এ ইনস্টিটিউটের শাখা খুলতে যাচ্ছি। শুধু তাই নয়- এবার আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেম্যান আইল্যান্ডেও ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্স’ এর শাখা উদ্বোধন করব আগামী ৬ মাসের মধ্যে।