মাইগ্রান (Migraine) একধরণের মাথাব্যথা। মাথার একদিকে হয় বলে বিখ্যাত হলেও দুদিকেও হতে দেখা গেছে। যাদের মাইগ্রেন হবার প্রবণতা আছে, তাদের শব্দ, আলো, গন্ধ, বাতাসের চাপের তারতম্য ও কিছু খাবার যেমন চকলেট, আঙুরর রস, পনির ইত্যদির প্রভাবে পুনরায় নতুন করে ভয়ঙ্কর মাথাব্যাথা শুরু হতে পারে। তবে মাইগ্রেনে শুধু মাথাব্যাথাই হয়না, তার সঙ্গে আরো কয়েকটি স্নায়বিক উপসর্গ হয়ে থাকে (যেমন কিছু আলো বা শব্দের অনুভুতি)। উপসর্গ অনুযায়ী মাইগ্রেনের মধ্যেও অনেক রকম ফের আছে। কারো কারো মতে সেরকম কয়েকটি মাইগ্রেনের উপসর্গ থাকলে মাথা ব্যাথা না থাকলেও মাইগ্রেন হয়েছে বলা যেতে পারে।
নিচের পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করলে বাড়িতে বসেই স্বল্প ও মাঝারি মাত্রার মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
** যে স্থানে ব্যথা বেশি অনুভূত হচ্ছে, সেখানে বরফ বা ঠাণ্ডা সেক দিন।
** মাথার নিচে ও কাঁধে বালিশ রেখে হেলান দিয়ে থাকুন।
** ঘরের আলো নিভিয়ে দিন, পর্দা টেনে দিন, দরজা-জানালা বন্ধ করে দিন, যাতে আলো ও শব্দ কম আসে।
** পারফিউম বা কোনো তীব্র গন্ধ শুঁকবেন না।
** কোনো কাজের চাপ নেবেন না।
** অল্প পরিমাণ চা ও কফি খেতে পারেন।
** বই পড়বেন না বা টিভি দেখবেন না।
** কম্পিউটার মনিটরের আলো থেকে দূরে থাকুন।
** ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
ওষুধ হিসেবে নিজে কিনে খেতে পারেন অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রফেন, ন্যাপ্রোক্সেন সোডিয়াম ও কিটোপ্রফেন-জাতীয় ওষুধ। যাঁদের অ্যাসিডিটি বা বুকজ্বালা সমস্যা আছে তাঁরা এসব ওষুধ খালি পেটে খাবেন না। অবশ্যই আগে কিছু খেয়ে তারপর ওষুধ সেবন করবেন। সঙ্গে নিতে পারেন ওমিপ্রাজল, রেনিটিডিন, অ্যান্টাসিড-জাতীয় ওষুধ।
প্যারাসিটামল বা এসিটামিনোফেন খেতে পারেন। সাধারণত এ ওষুধটিকে সবার জন্য তুলনামূলক নিরাপদ মনে করা হয়। তবে যাঁদের লিভারের অসুখ আছে বা যাঁরা নিয়মিত অ্যালকোহল খান তাঁদের জন্য প্যারাসিটামল এড়িয়ে চলা ভালো। মাইগ্রেন নিয়মিত হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। সাধারণত ডাক্তাররা এ ক্ষেত্রে সুমাট্রিপটান, জলমিট্রিপটান, ইলেট্রিপটান, ন্যারাট্রিপটান, রিজাট্রিপটান, ফ্রোভাট্রিপটান, অ্যালমোট্রিপটান-জাতীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন।
ডা. এ জেড এম আহসান, রেসিডেন্ট, বিএসএমএমইউ, ঢাকা।