প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসকদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকারি চাকরি করছেন, সরকারি বেতন নিচ্ছেন অথচ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন না তা হবে না। তিনি বলেন, ইচ্ছে না হলে বা থাকতে অসুবিধা হলে চাকরি ছেড়ে দিন। আজ শনিবার বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের ১৯তম বাংলাদেশ মেডিকেল সম্মেলন ও বিশেষ বার্ষিক সাধারণ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী সরকারি বেতনভুক্ত চিকিৎসকদের সামাজিক দায়িত্বের কথা বিবেচনা করে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দেশে চিকিৎসা কার্যক্রম আরো জোরদার করার আহ্বান জানান।
চিকিৎসা েেত্র গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৌলিক গবেষণার পাশাপাশি প্রায়োগিক গবেষণাও করতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিগুলোকে গবেষণার কাজে এগিয়ে আসতে হবে। যাতে রোগীরা কম খরচে চিকিৎসা পেতে পারে। অল্প টাকায় ওষুধ পেতে পারেন। এ জন্য সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ওষুধ শিল্প একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত। দেশে প্রয়োজনীয় ওষুধের শতকরা ৯৭ ভাগ দেশীয় উৎপাদন থেকে মেটানো হচ্ছে। প্রায় ৮০টি দেশে ওষুধ রফতানি হচ্ছে। এছাড়া দেশের কয়েকটি ওষুধ কম্পানির ভ্যাকসিন উৎপাদন ভ্যাটমুক্ত রাখা হয়েছে। ভ্যাকসিন টেস্টিং এর জন্য ল্যাবরেটরি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যখাতের বাজেট বাড়ানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, সরকারি কোষাগারে রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বাড়লে বাজেট বাড়বে। সেখান থেকে স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। চিকিৎসকদের নিয়মিত কর পরিশোধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের মাঝে কর প্রদানের প্রবণতা কম। অনেক সময় দেখা যায় চিকিৎসকরাসহ দেশের অনেক নামিদামি, বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিরা কর ফাঁকি দেন। কর যেন দিতে না হয় এজন্য এক জায়গার টাকা অন্য জায়গায় রাখেন। বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অর্থের কর ফাঁকি দেন। কিন্তু এটা মোটেও উচিত নয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মজিবুর রহমান ফকির, বিএমএ মহাসচিব ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, ডা. আব্দুর রউফ সরদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে চিকিৎসা সেবায় অবদানের জন্য তিনজন বিশিষ্ট চিকিৎসককে বিএমএ মরণোত্তর ও পাঁচ জন চিকিৎসককে বিএমএ পদক দেয়া হয়।