চুল পাকা এখন আর বয়স বাড়ার লক্ষণ নয়। চুলের অকালপক্বতার মূল কারণ জিনগত। কোন পরিবারের সদস্যদের চুল তাড়াতাড়ি পাকতে শুরু হওয়ার ধারা থাকলে প্রতি প্রজন্মেই তা বহাল থাকতে পারে। এছাড়া চাকরির অত্যধিক স্ট্রেস, পরিবেশ দূষণ, খাবার-দাবারের কারণে অল্প বয়সেই চুল পেকে যায়।
একবার চুল পাকতে শুরু করলে খুব দ্রুত মাথার বাকি অংশও সাদা হতে থাকে। এক্ষেত্রে অনেকেই চুলে কালার বা কালো রঙ ব্যবহার করেন। কারও কারও ক্ষেত্রে এই কালার ম্যাচ করে না যাতে অ্যালার্জি থেকে শুরু করে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত!
এ পর্যায়ে বেছে নিন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি। যাতে চুলের রঙ এবং স্বাস্থ্য দুটাই বজায় থাকবে।
মেহেন্দি বা হেনা:
প্রাকৃতিকভাবে চুল রাঙাতে এবং চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে মেহেন্দির জুড়ি নেই। যেদিন মেহেন্দি করবেন, তার আগের দিন এর গুঁড়া ভিজিয়ে রাখুন। চুলে লালচে ভাব আনতে হলে মেহেন্দি ভেজাবেন লোহার পাত্রে। আর শুধু কন্ডিশনিং করতে হলে যে কোনও পাত্রেই ভেজাতে পারেন। পরের দিন চায়ের লিকার বানান। কিছুক্ষণ চা পাতা ভিজতে দিন পানিতে। বেশিক্ষণ কিন্তু ভিজিয়ে রাখবেন না। ঠান্ডা লিকারে মেশান ভেজানো হেনা। মাথায় খুসকির সমস্যা থাকলে এতে মেশান লেবুর রস।
এবার মেহেন্দির পেস্ট তৈরির পালা। খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্যাক বেশি তরল না হয়ে যায়। তাহলে চুলে লাগানোর সময় কপাল দিয়ে গড়িয়ে পড়বে। তাই থকথকে প্যাক বানিয়ে নিন। ব্রাশ দিয়ে মাথায় ভাল করে লাগিয়ে ফেলুন। স্ক্যাল্পে যেন না লাগে তা খেয়াল রাখবেন।
অন্তত এক ঘণ্টা মেহেন্দির প্যাক লাগিয়ে রাখুন। তারপর উষ্ণ পানিতে শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পু সালফেটমুক্ত হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এভাবে প্রতিমাসে একবার করে করতে থাকুন। কয়েক মাসে পরে নিজেই দেখবেন চুলের পরিবর্তন।
কারিপাতা:
চুলের জন্য খুবই উপকারী। ‘ভিটামিন এ’, ‘ভিটামিন ই’, ক্যালসিয়াম, কপার, তামায় সমৃদ্ধ কারিপাতা চুলের অকালপক্বতা রোধ করে। চুলকে মোলায়েমও বানায়। নারিকেল তেলে কারিপাতা মিশিয়ে ফোটান। হালকা কালচে আভা দেখা দিলে বুঝবেন আর গরম করার দরকার নেই। এবার ওই মিশ্রণ ঠান্ডা করে ভাল করে চুলের আগাগোড়া লাগিয়ে নিন। এরপর হাল্কা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’ থেকে তিনদিন এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
কালো কফি:
গরম পানিতে কালো কফি দিয়ে ক্বাথ বানান। মিশ্রণ ঠান্ডা হলে ওই ক্বাথ চুলে ভাল করে মাখিয়ে নিন। অন্তত বিশ মিনিট ওইভাবেই চুল রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে নিয়মিত ভাবে দুই থেকে তিনদিন এটা করতে থাকুন। চুলে বাদামি আভাস চলে আসবে।
আমলা:
আমলা বা আমলকি চুলের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে আদিকাল থেকে। নারিকেল তেলের সঙ্গে আমলাগুঁড়ো মিশিয়ে গরম করতে হবে। তারপর সেটা ছেঁকে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। রাতভর মাথায় রাখুন। তারপর সকালে উষ্ণ পানিতে চুল ধুয়ে নিন।
পেঁয়াজ:
অকালে চুল পাকা রোধে পেঁয়াজও খুব কার্যকরী। পেঁয়াজের রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে অপেক্ষা করুন আধঘণ্টা। তারপর উষ্ণ পানিতে চুল ধুয়ে ফেলুন।