বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ১৪ জুন : সারাদেশে পালিত হচ্ছে

বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ১৪ জুন : সারাদেশে পালিত হচ্ছে
বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ১৪ জুন : সারাদেশে পালিত হচ্ছে
॥ ই-হেলথ২৪ ডেস্ক ॥  গত ২০০৪ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে প্রতিবছর ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘সেচ্ছায় রক্তদাতা একেকজন বীর।’ দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, চিকিৎসাসেবা প্রদান ও আলোচনা সভা করবে। বিশ্বে যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে বাঁচিয়েছে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ তাদের লক্ষ্য করেই দিবসটি পালিত হচ্ছে।

১৯০১ সালে অস্ট্রিয়ান কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার রক্তের বিভিন্ন গ্রুপ আবিষ্কারের পরই শুরু হয় রক্তদান। তখন পর্যন্ত জানা যায়নি যে, ভিন্ন গ্রুপের রক্ত শরীরে নিলে মৃত্যু হতে পারে। ল্যান্ডস্টেইনার প্রথম আবিষ্কার করেন যে দাতা ও গ্রহীতার রক্ত একই গ্রুপের না হলে গ্রহীতার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ১৯৩০ সালে এই আবিষ্কারের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান। এর পরই শুরু হয় নিরাপদ রক্ত সঞ্চালন। এখন প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় তিন কোটি ২০ লাখ লোক রক্তদান করে থাকে। কিন্তু রক্তের প্রয়োজন আরো বেশি।

কেউ যখন স্বেচ্ছায় নিজ রক্ত অন্য কারো স্বার্থে দান করে, তাকে রক্তদান বলে। এ কারণে রক্তদাতার অবশ্যই সম্মতির প্রয়োজন আছে এবং এর মাধ্যমে পূর্ণ বয়স্ক নয় (১৮ বছরের নিচে) এমন কারো রক্ত নেওয়া নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এখনকার সময়ে অবশ্য ১৭ বছর হলেই রক্ত দেওয়ার উপযুক্ত ধরা হয়। রক্ত দেওয়ার আগে রক্তের স্ক্রিনিং টেস্ট বা দাতার রক্ত নিরাপদ কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

এ ছাড়া দাতা রক্তদানের জন্য উপযুক্ত কি না, তা জানার জন্য কিছু পরীক্ষাও করা হয়। যেমন_ এনিমিয়া বা রক্তাল্পতা, জন্ডিস, নাড়ির গতি বা পালস, শরীরের তাপমাত্রা এবং ওজন। অনেকে রক্ত দিতে দ্বিধায় ভোগেন। এর কারণ রক্তদানের পদ্ধতি ও পরবর্তী প্রভাব সম্পর্কে অজ্ঞতা ও অযথা ভীতি।

প্রত্যেক সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারী প্রতি তিন মাস অন্তর নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে রক্তদান করতে পারেন। এতে স্বাস্থ্যে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব তো পরেই না, বরং নিয়মিত রক্তদানের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে।

১) স্ক্রিনিংয়ের কারণে দাতা জানতে পারেন তিনি কোনো সংক্রামক রোগে ভুগছেন কি না।

২) নিয়মিত রক্তদাতার হার্ট ভাল থাকে।

৩) নিয়মিত রক্তদানে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। ফলে দাতার হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদির ঝুঁকি কমে যায়।

৪) রক্তদানের মাধ্যমে মানুষের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ বাড়ে।

৫) নিয়মিত রক্তদানে দাতার শরীরের কিছু ভালো পরিবর্তন সাধিত হয়। কোনো দুর্ঘটনাজনিত কারণে দাতার শরীর থেকে কিছু রক্তপাত হলেও তার কোনো সমস্যা হয় না।

৬) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।

৭) ধর্মীয়ভাবেও এটি একটি প্রশংসনীয় দান।

৮) কোনো সেন্টারে একবার রক্তদান করলে ওই সেন্টার দাতার প্রয়োজনে যেকোনো সময় রক্ত সরবরাহ করে থাকে।

Exit mobile version