চিকিৎসকদের ২ দিন প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধের ঘোষণা

সেন্ট্রাল হাসপাতালে প্রসূতি মাহবুবু রহামান আঁখি ও নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসক গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামী সোমবার ও পরদিন মঙ্গলবার সারাদেশে প্রাইভেট চেম্বার ও অপারেশন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সেন্ট্রাল হাসপাতালে প্রসূতি মাহবুবু রহামান আঁখি ও নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসক গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামী সোমবার ও পরদিন মঙ্গলবার (১৭ ও ১৮ জুলাই) সারাদেশে প্রাইভেট চেম্বার ও অপারেশন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনায় দুইজন চিকিৎসককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শনিবার (১৫ জুলাই) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও অবস্ট্রেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনেকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) যৌথ বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। শনিবার (১৫ জুলাই) ওজিএসবির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক সালমা রউফ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, শনিবার দুপুর ১টায় সব সোসাইটির নেতারা এবং বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বিএমএ কার্যালয়ে এক সভায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনায় দুইজন চিকিৎসককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ওজিএসবির এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার দুপুর ১টায় সব চিকিৎসক সোসাইটির নেতারা বিএমএর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের কার্যালয়ে সভা করেছেন। এতে সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রসূতি ও নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় দুইজন চিকিৎসককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-

১. আগামী ১৬ জুলাই প্রতিটি মেডিকেল কলেজ, জেলা-উপজেলা এবং প্রাইভেট হাসপাতালে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত মানববন্ধন।
২. ১৭ ও ১৮ জুলাই সরাদেশে সব প্রাইভেট চেম্বার এবং প্রাইভেট অপারেশন বন্ধ থাকবে।
৩. আগামী ১৮ জুলাই আবারও বিএমএর সাথে বসে পরবর্তী আন্দোলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

এসব কর্মসূচিতে ওজিএসবির ও অন্যান্য সোসাইটির সব সদস্যের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করেছেন চিকিৎসক নেতারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, বিএমএর মানববন্ধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মবিরতিসহ প্রাইভেট চেম্বার ও অপারেশন বন্ধের ব্যাপারে ওজিএসবিসহ সোসাইটিগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা এ কর্মসূচি পালন করবে। এটি বিএমএর কর্মসূচি নয়।

উল্লেখ্য, গত ৯ জুন সেন্ট্রাল হসপিটালে অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার (গাইনি) অধীনে ভর্তি হন মাহাবুবা রহমান আঁখি। কিন্তু সেদিন ডা. সংযুক্তা হসপিটালেই ছিলেন না। পরে তার দুই সহযোগী চিকিৎসক আঁখির প্রসব করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জটিলতা দেখা দেওয়ায় নবজাতককে এনআইসিইউতে রাখা হয়। একইসঙ্গে আঁখির অবস্থার অবনতি হলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

১০ জুন বিকেলে সেন্ট্রাল হসপিটালে আঁখির নবজাতক সন্তান মারা যায়। এ ঘটনায় আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী ধানমন্ডি থানায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা, ডা. মুনা সাহা, ডা. মিলি, সহকারী জমির, এহসান ও হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজকে আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের পর ১৫ জুন রাতে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনা সাহাকে হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ জুন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহবুবা রহমান আঁখিও।

Exit mobile version