॥ ই-হেলথ২৪ ডেস্ক ॥ আমরা যখন ডিপ্রেশন সম্পর্কে আলোচনা করি, তখন চিকিত্সা বিজ্ঞানের ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন সম্পর্কে পাঠক-পাঠিকাদের অবগত করার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি পাঠক-পাঠিকাদের মধ্যে ডিপ্রেশন সচেতনতা তৈরি করতে। ডিপ্রেশনে ভুক্তভোগী বোঝেন যে, ডিপ্রেশন কত বড় ভয়ঙ্কর একটি রোগ। যে রোগ রোগীকে আত্মহত্যার দিকেও ঠেলে দিতে পারে। অথচ ডিপ্রেশনের রয়েছে আধুনিকতম চিকিত্সা।
ডিপ্রেশনের সাধারণত প্রাথমিক তিনটি টাইপ দেখা যায়। এগুলো হলো—
মেজর ডিপ্রেশন
— এটি প্রায় ‘ফ্লু’র মতো।
— এটি প্রায়ই কয়েক মাস অব্যাহত থাকে।
— চিকিত্সা না করালে এটি আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
— প্রতিটি পুনরাক্রমণ অনেক দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবণতা দেখা দেয়।
— পুনরায় আক্রমণ রোগীকে আগের থেকে বেশি মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়, অসুস্থ করে দেয়।
ক্রনিক ডিপ্রেশন
— ক্রনিক ডিপ্রেশন হলো হালকা মাত্রার বা Low-grade type.
— এটি দীর্ঘমেয়াদি ডিপ্রেশন (Long-term depression).
— এ ধরনের ডিপ্রেশন বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত চলতে থাকে।
— কিছু কিছু মানুষ তাদের জীবনের অসহনীয় ঘটনার ফলস্বরূপ এটিতে আক্রান্ত হতে পারে।
— এই Long-term, Low-grade type dys ডিপ্রেশনকে ডিসথেইমিয়াও (Dysthymia) বলা হয়। Dys-এর অর্থ হলো গোলযোগ এবং ঞযুসরধ ব্যবহার করা হয় মুড বোঝাতে। তাহলে Dysthymia’র অর্থ হলো মুডের গোলযোগ বা Disorder of one’s mood.
ম্যানিক ডিপ্রেশন
— ডিপ্রেশন কমে কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তা পরিবর্তিত হয়ে ম্যানিয়ায় রূপ নেয়।
— একশ’জনের মধ্যে প্রায় একজন তাদের জীবনে ম্যানিক ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়।
— এ মানসিক অবস্থা বা রোগটি যে কোনো বয়স বা সময়েই আরম্ভ হতে পারে।
— নারী-পুরুষ উভয়েরই এটি হতে পারে।
— গবেষণায় লক্ষ্য করা গেছে যে, ম্যানিক ডিপ্রেশন পরিবারের অন্য সদস্যদের মাঝেও দেখা যায়।
— এ মানসিক রোগটি ‘জিনগত’ কারণেও সংঘটিত হয়ে থাকে।
— এ রোগ রোগীর জন্য দারুণ ভোগান্তির সৃষ্টি করে।
— এ রোগের এপিসোড মাঝেমধ্যে স্ট্রেস ও শারীরিক রোগ-বালাইয়ের প্রকাশ ঘটায়।
— ম্যানিক ডিপ্রেশনে রোগীর ডিপ্রেসিভ অনুভূতিগুলো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে থাকে।
— এ ধরনের ডিপ্রেশন মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্ম জটিল করে তোলে।
— এ ধরনের ডিপ্রেশন অনেক সময় দৈহিক বিভিন্ন সমস্যার প্রকাশ ঘটায়।
— ম্যানিক ডিপ্রেশন হলে রোগীর মাঝে দেখা দেয় অকারণ অনুপ্রেরণা, মাত্রাতিরিক্ত সুখের দোলা।
যুক্তিহীনভাবে রোগীর মাঝে দেখা দেয় কর্তৃত্বময়, অহংবোধ, বাড়াবাড়ি।
— মাঝে মাঝে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপও প্রকাশ পেতে দেখা যায়।
— এ রোগটি ম্যানিক ডিপ্রেশন ছাড়াও বাইপোলার ডিসঅর্ডার নামে পরিচিত।
— এ রোগে রোগীর আবেগের ওঠানামা করে।
— রোগীর মন দ্রুত বদলায়।
— রোগীর চিন্তাভাবনা চটজলদি পরিবর্তিত হয়।
— যত যাই হোক না কেন, ম্যানিক ডিপ্রেশনের এমন চিকিত্সা রয়েছে যার ফলে রোগীর রোগের তীব্র আক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় বহুলাংশে।
— আপনারা যে কোনো টাইপের ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হন না কেন, প্রতিটি টাইপেরই আধুনিকতম চিকিত্সা রয়েছে। তবে এ চিকিত্সা গ্রহণ করার জন্য আপনাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
রোগ হলে তো তার চিকিত্সা করতেই হবে—এটাই সত্য, এটাই সচেতনতা।