॥ ই-হেলথ২৪ রিপোর্ট ॥ আগামী ২ জুন জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। একই সময়ে ২ থেকে ৫ বছর বয়সী ১ কোটি ৯০ লাখের বেশি শিশুকে কৃমিনাশক বড়ি খাওয়ানো হবে।
এ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ৬ মাস পর্যন্ত শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রচারণাও চালানো হবে। গত ২৯ মে মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব হুমায়ুন কবির।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশব্যাপী স্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। ভ্রাম্যমাণ কর্মীরা বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, খেয়াঘাট এলাকাতেও এ কর্মসূচি চালাবেন। সরকারি এ কার্যক্রম সফল করতে মাঠপর্যায়ে সাড়ে ৪ লাখ মাঠকর্মী কাজ করবেন। জাতীয় পর্যায়ে ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটি, কোর কমিটি এবং বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে।
কমিটি গঠনের পর জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকদের অবহিতকরণ সভার মাধ্যমে এর প্রস্তুতি নেওয়া হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে ও কর্মসূচি সফল করতে পত্রপত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশনসহ সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।
আ ফ ম রুহুল হক আরও বলেন, প্রতি বছর সারাবিশ্বে ৫ লাখ শিশু ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত কারণে রাতকানা রোগে ভুগে অন্ধত্ব বরণ করে। বাংলাদেশে এ ধরনের অসুস্থতার কারণে অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুদের এক-তৃতীয়াংশ মৃত্যুবরণ করে।
১৯৬৩ সালে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, ওই সময় ৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত রাতকানা রোগের হার ছিল ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ১৯৭৪ সাল থেকে রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধে ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ৬ মাস পর পর একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল বিতরণ কার্যক্রম চালু হয়।
আর ১৯৯৪ সাল থেকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইনে শিশুদের অপুষ্টি এবং রক্তস্বল্পতা দূর করার লক্ষ্যে ২০০৪ সাল থেকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের সঙ্গে ২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের একটি করে ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছে। ১ বছরের নিচে জীবিত শিশুপ্রতি হাজারে মারা যায় ৪৩ জন। আর ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু মারা যায় ৫৩ জন, যা অনেক বেশি। সব দেশে ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত প্রাদুর্ভাব রয়েছে। তবে আমাদের দেশে ভিটামিন ‘এ’র অভাবজনিত রাতকানা রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কমে গেছে।
২০০৯ সালের জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে দেশে রাতকানার হার দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ। এ হার ১ শতাংশের বেশি হলে স্বাস্থ্য সমস্যা বলে বিবেচনা করা হতো।
মন্ত্রী জানান, খুচরাপর্যায়ে ওষুধের মূল্য কেউ ঠিক রাখতে পারবে না। প্রতিটি ওষুধের প্যাকেটের গায়ে মূল্য লেখা থাকা সত্ত্বেও অনেক খুচরা দোকানদার এর অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করছেন।
নার্স নিয়োগের নীতিমালা প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, সরকারের শীর্ষপর্যায়ে বৈঠক করে নার্স নিয়োগ নীতিমালা করা হচ্ছে। শিগগিরই এটি চূড়ান্ত করে নতুন ৫ হাজার নার্স নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশে ৬২ ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা ছিল। কিন্তু এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।