॥ ই-হেলথ২৪ রিপোর্ট ॥ সুস্থ সবল জাতি গঠনে প্রতিটি নবজাতকের নিরাপদ প্রসবের ব্যাপারে অধিক যত্নশীল এবং মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সরকারি প্রচেষ্টায় সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
এছাড়াও গর্ভধারণের আগে ও পরে প্রসূতি মায়েদের পুষ্টিকর খাবার প্রদান এবং তারা যাতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও মানসিক চাপমুক্ত থাকে সে ব্যাপারে অধিক মনোযোগী হতেও পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ মে সোমবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস-২০১২ ও শ্রেষ্ঠ স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নিরাপদ প্রসব
নিশ্চিত করতে তার সরকার ধাত্রীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে এবং তিন বছরমেয়াদি ধাত্রীকোর্স আগামী জুলাই থেকে শুরু হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্কিল বার্থ অ্যাটেনডেন্ট প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৬৫৯ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৫৯ জেলা হাসপাতাল, ১৩২ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৭০টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জরুরি সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, হতদরিদ্র মায়েদের গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসবপরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ‘মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম’ চালু করা হয়েছে এবং ‘লেকটেটিং মাদার ভাতা’ দেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় ১১ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে এবং বেশিরভাগ হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা পেতে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সকল হাসপাতালে ওয়েব ক্যামেরা ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
সরকার চিকিৎসক, সেবিকা ও স্বাস্থ্যসেবাদানকারী নিয়োগের মাধ্যমে গোটা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল নেটওয়ার্কে যুক্ত করার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সরকার স্বাস্থ্যসহ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রে জনগণের মৌলিক অধিকার পূরণে বদ্ধপরিকর যাতে দেশের প্রতিটি মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ইউনিসেফ, ইউএনএফপিএ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাইকাসহ বেসরকারি সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানান। তিনি মা, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন ও মান বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও তাগিদ দেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ উপদেষ্টা ড. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ও স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মুজিবুর রহমান ফকির অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব এম হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক আমীর হোসেন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খন্দকার মোহাম্মদ শেফায়েতুল্লাহ বক্তৃতা করেন।
উল্লেখ্য, মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতি বছর জাতীয়ভাবে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হল ‘নিরাপদ প্রসব, মায়ের অধিকার’।