॥ ই-হেলথ২৪ ডেস্ক ॥ ভারতের মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থা বড় হাতের অক্ষরে ব্যবস্থাপত্র লেখার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। চিকিৎসকেরা যাতে আলাদা আলাদা করে প্রয়োজনীয় সব ওষুধ ও সেবার নাম লেখেন, এ জন্য আন্দোলন শুরু করেছে সংস্থাটি।
ইতিমধ্যে চিকিৎসকদের সংগঠনের কাছে এ বিষয়ে আবেদনও জানিয়েছে ফোরাম ফর ইনহান্সমেন্ট অব কোয়ালিটি ইন হেলথকেয়ার (এফইকিউএইচ) নামের এই সংস্থাটি।
তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কোয়ালিটি কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (কিউসিআই)। কিউসিআই সেবা খাতে স্বীকৃতিদানকারী একটি আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান।
এই দুটি প্রতিষ্ঠান গত সপ্তাহে চিকিৎসকদের দুর্বোধ্য হাতের লেখা পরিবর্তন করে ব্যবস্থাপত্রে ক্যাপিটল লেটার (আলাদা আলাদা করে) চালুর দাবিতে একটি বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে চিকিৎসকেরা ও চিকিৎসকদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বলা হয়, অনেক চিকিৎসকের হাতের লেখা পাঠোদ্ধার করা রীতিমতো দুরূহ ব্যাপার। রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে (প্রেসক্রিপশন) হিজিবিজি করে চিকিৎসকেরা যা লেখেন, ওষুধের দোকানিও অনেক ক্ষেত্রে তা বুঝতে পারেন না।
একাধিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, রোগী বা রোগীর স্বজনেরা তো দূরের কথা, চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রের দুর্বোধ্য লেখা বুঝতে না পারাদের দলে আছেন হাসপাতালের সেবিকা, ওষুধের দোকানের কর্মচারী পর্যন্ত। শুধু ব্যবস্থাপত্রের লেখা পড়তে বা বুঝতে না পারায় দোকানি অনেক সময়ই রোগীদের কাছে ভুল ওষুধ বিক্রি করছেন। হাসপাতালের সেবিকারাও ভুল চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। এতে রোগীদের প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটছে।
বৈঠকে এফইকিউএইচের চেয়ারপারসন প্রকাশ গাডজিল বলেন, ‘চিকিৎসকদের লেখা ব্যবস্থাপত্র দোকানের ফার্মাসিস্টদের বুঝতে না পারার কারণে কত লোক ক্ষতির শিকার হয়েছে বা মারা গেছে, এ সংক্রান্ত কোনো হিসাব আমাদের কাছে নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান দেখে আমরা এটা নিশ্চিত, ভারতেও একই ঘটনা ঘটছে। ভারতে প্রতিদিন ৪০ লাখ ব্যবস্থাপত্র লেখা হচ্ছে, এর মধ্যে ভুল নিশ্চয়ই হচ্ছে।’
একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, চিকিৎসকদের হিজিবিজি করে লেখা দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্রের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর সাত হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এ ছাড়া একই কারণে দেশটির ১৫ লাখ মানুষ নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকে শেষ পর্যন্ত মারা যাচ্ছে।
চিকিৎসাবিষয়ক আইনি বিশেষজ্ঞ ললিত কাপুর বলেন, ‘চিকিৎসকদের দীর্ঘ পুরোনো এই অভ্যাস পরিবর্তন করা সহজ হবে না। ব্যবস্থাপত্রে ক্যাপিটল লেটার লেখার অভ্যাস চালু করতে চাইলে মেডিকেল কলেজ থেকেই তা শুরু করতে হবে।
সূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া