দেশের ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য স্বস্তি নিয়ে এলো এমজিএইচ হেলথকেয়ার লিমিটেড। অসংক্রামক মরণব্যাধী রোগের ঔষধ বাংলাদেশের রোগীদের হাতের নাগালে নিয়ে আসতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক অ্যাংলো-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ র সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এমজিএইচ হেলথকেয়ার লিমিটেড।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ঢাকাস্থ সুইডিশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্ট কাউন্সিল আয়োজিত ‘Driving access to innovative medicines to improve patient outcomes in Bangladesh’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠানে এমজিএইচ হেলথকেয়ারকে বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার একমাত্র পরিবেশক নিয়োগ করা হয়েছে।
আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে সুইডিশ রাষ্ট্রদূত চারলোটটা স্কালাইটার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন প্রমুখ। এসময় বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা সহযোগিতার অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তিনি। তবে বনানীর অগ্নিকাণ্ডের কারণে নির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিতে পারেননি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী মিঃ জাহিদ মালেক।
এই অনুষ্ঠানে অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র কোম্পানি প্রেসিডেন্ট নিতিন কাপুর বলেন, এই অংশীদারিত্ব চুক্তির মাধ্যমে আস্ট্রাজেনেকা ও এমজিএইচ হেলথ কেয়ারের যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা সেবায় বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি নিজেদের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার হাত ধরে বাংলাদেশে প্রচলিত ক্যান্সার এবং কার্ডিওভাসকুলার-মেটাবলিক-রেনাল ডিজিজের মতো অসংক্রমিত (এনসিডি) রোগের চিকিৎসায় উদ্ভাবনী সেবা প্রদানের পথ আরো প্রশস্ত হবে। উদ্ভাবনী ও টেকসই চিকিৎসা পাবেন বাংলাদেশের রোগীরা।
নিতিন কাপুর আরও বলেন ‘রোগীর আরোগ্যেলাভের জন্য সহযোগিতার ভিত্তিতেই সেবার মান উন্নয়নে অ্যাস্ট্রাজেনেকা সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অসংক্রামিত রোগে মৃত্যুর হার বেশ বেড়েছে। এর মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার রোগে ৩০ শতাংশ, ক্যান্সারে ১২ শাতংশ এবং দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগে ১০ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে।
এমজিএইচ গ্রূপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিস আহমেদ বলেন, মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত এগারো বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৭% প্রবৃদ্ধি হয়েছে- যা বাংলাদেশের মতো তরুণ একটি দেশের জন্য বিরাট দৃষ্টান্ত। আমরা আজ গর্বিত যে আস্ট্রাজেনেকার মাধ্যমে আমরা এই রোগীদের পাশে এসে দাঁড়াতে পেরেছি। আজকের এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে রোগীদের কাছে উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে হাজির হতে পারছি।
তিনি বলেন, আমরা উভয় প্রতিষ্ঠান মিলে চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে উদ্ভাবনী চিকিৎসা সেবা দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। অসংক্রমিত এসব ঘাতক রোগ থেকে চিকিৎসক এবং রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন।
আনিস আহমেদ আরও বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা সঠিক ঔষধ ও সেবা নিয়ে বাংলাদেশ রোগীদের সর্বোত্তম যত্নে রাখতে চাই। এজন্য এমজিএইচ হেলথকেয়ার লিমিটেড তার দেশজুড়ে বিস্তৃত বিক্রয় ও বিতরণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সর্বোচ্চ মানের ঔষধ রোগীদের হাতের নাগালে পৌঁছে দেব।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা অসংক্রামিত রোগের ঔষধ উৎপাদনে ইতিমধ্যেই বিশ্বে সাড়া ফেলেছে বিশ্বনন্দিত ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। শ্বাসযন্ত্র, অনকোলজি এবং কার্ডিওভাসকুলার, রেনাল এবং মেটাবোলিজম- এ তিনটি therapeutic ক্ষেত্রেই চিকিৎসকদের চাহিদা অনুযায়ী ঔষধ উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তাদের উৎপাদিত ঔষধ বিশেষ করে অটোইমিউনিটি, নিউরোসাইন্স এবং ইনফেকশান ম্যানেজমেন্টে খুবই কার্যকর।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে কাজ করে এবং বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ রোগী এর উদ্ভাবনী ওষুধগুলি ব্যবহার করে। এরই ধারাবাহিকতায় অনকোলজি, কার্ডিওভাসকুলার এবং রেনাল এবং মেটাবোলিজম রোগীদের জন্য কার্যকর ঔষধ নিয়ে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
এমজিএইচ হেলথ কেয়ার লিমিটেড বাংলাদেশের সুপরিচিত ঔষধ পরিবেশক প্রতিষ্ঠান। এর রয়েছে দেশ বিস্তৃত বিপনন নেটওয়ার্ক। অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং সানোফির মতো আন্তর্জাতিক ব্যান্ডের ঔষধ বিপনন করছে কৃতিত্বের সঙ্গে।
বিশ্বের ১৮টি দেশে ফ্যাশন, অটোমোটিভ, হেলথ কেয়ার সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মালিকানায় চেইন ম্যানেজমেন্ট, টোটাল কার্গো ব্যবস্থাপনা, বাজেট এয়ারলাইন্স, ট্র্যাভেল পোর্টের গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (জিডিএস), এফ এম রেডিও, ব্র্যান্ডেড ফুড ফ্র্যাঞ্চাইজিস, কমার্শিয়াল ব্যাংকিং, চা প্ল্যান্টেশন এবং রাইড-শেয়ারিং ব্যবসার সাথে জড়িত। ২০১৯ সালের ভেতর সৌদি আরবে এবং সালে চীনে নিজস্ব অফিস খুলতে যাচ্ছে এমজিএইচ।
বিজনেস সুইডেনঃ সুইডিশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্ট কাউন্সিল সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সুইডিশ রপ্তানি শিল্প সমিতি এর অধীনে পরিচালিত হয়। বিজনেস সুইডেন মুলত সুইডেনের সাথে অন্যান্য রাষ্ট্রের দ্বিপার্শ্বিক বানিজ্য ও বিনিয়োগ কে প্রচার করে থাকে।