পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে প্রক্টর অধ্যাপক হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ আদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। চারজন চিকিৎসককে শারীরিক নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শনিবার রাতে জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের সভা, সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করা হলো। কি কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি তা উল্লেখ করা হয়নি।
জানা যায়, শুক্রবার (২২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার (চিকিৎসক) ওপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ওই চারজন কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য (ভিসি) মো. শারফুদ্দিন আহমেদের অনুসারী বলে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারি ও গন্ডগোলের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, মিছিল-মিটিংসহ নানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিল। এছাড়া চারজন চিকিৎসককে শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শারীরিক নির্যাতনের শিকার চারজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অবৈধ’ নিয়োগের সঙ্গে তাঁরা জড়িত। শিক্ষক-কর্মকর্তারা তাঁদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়েছেন। ওই চার কর্মকর্তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ না করতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বর্তমান উপাচার্যের (শারফুদ্দিন আহমেদ) মেয়াদ ২৮ মার্চ পর্যন্ত। এরপর ২৯ মার্চ থেকে নতুন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেবেন অধ্যাপক দীন মো. নূরুল হক। বিদায় নেওয়ার আগে বর্তমান উপাচার্যের কিছু মেডিকেল অফিসার, নার্স ও কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ওই নিয়োগের চেষ্টা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ওই নিয়োগকে কেন্দ্র করে আগামীকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা ছিল। সেই সিন্ডিকেট সভা ঠেকাতে উপাচার্যবিরোধী সংগঠনগুলো এক হয়েছে। তাই সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ আজ রাতে বলেন, চারজন কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আপাতত সিন্ডিকেট সভা হবে না। তিনি উপাচার্য হিসেবে শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।
বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদকালে বিভিন্ন সময় হওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ ছাপা হয়। এদিকে বিএসএমএমইউতে এবারই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের একজন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।