ফাতেমা সুলতানা
আমাদের দেশে অনেকে বাতের ব্যথায় ভোগেন। এই ব্যথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। ডাক্তারি পরিভাষায় একে অস্টিওআর্থ্রাইটিস বলে। এর ফলে হাড়ের বিকৃতি ঘটে। পুরুষদের তুলনায় মহিলারা এই রোগে বেশি ভোগেন। খাদ্য তালিকায় অপর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম গ্রহণ, ভিটামিন-ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে সংশ্লেষণ না হওয়া এবং অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম করার ফলে হাড় ক্ষয়ের সম্ভাবনা থাকে। পক্ষান্তরে বেশি পরিশ্রম না করার ফলে স্থূলতা মেনোপোজও অস্টিওআর্থ্রাইটিসের অন্যতম কারণ বলে ধরা যায়। ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড়ের ভেতরের অংশ ফাঁপা হয়ে যায়, ফলে শরীরের অতিরিক্ত ওজনের চাপ হাড়ের ওপর পড়ে এবং হাড় বাঁকা হতে শুরু হয়। একসময় দ্রুত তা ক্ষয় হতে হতে ভেঙে যায়।
বড়দের এ সমস্যাকে অস্টিওম্যালাসিয়া বলে। ভিটামিন-ডি’র অভাবে শিশুদের রিকেট হয়ে থাকে। ঘনবসতিপূর্ণ অন্ধকার পরিবেশে যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না সেখানকার অপুষ্টিতে আক্রান্ত ছেলেমেয়ে ও মহিলাদের এই রোগ বেশি হতে দেখা যায়। ঘনঘন সন্তান জš§দানের ফলে বৃদ্ধ বয়সে এসে হাড়ের রোগ অস্টিওপোরোসিস হতে দেখা যায়।
বাতের ব্যথায় ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস জমতে পারে না বলে পেশি দুর্বল হয়। তখন হাড় ধীরে ধীরে বাঁকা হয়ে যায়। অস্থির অগ্রভাগে তরুণাস্থি নরম হয়। হাড়ের গিরা ফুলে যায়, হাতের কবজির ও পায়ের গোড়ালির হাড় বেঁকে যায়। বুকের পাঁজরের হাড় মালার গুঁটির মতো দেখায়।
বাতের ব্যথা হওয়ার আগেই এর প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার, ওমেগা-৬ ফ্যাটিএসিড, ফসফরাস গ্রহণ করতে হবে। যাদের ওজন বেশি তাদের ওজন কমাতে হবে। এছাড়া ব্যথাযুক্ত স্থানে নরম কাপড় দিয়ে হালকাভাবে সেঁক দিতে হবে।
খাদ্য তালিকা সুষম হলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। অস্টিওআর্থ্রাইটিসের জন্য দুধ, হাড়ের ঝোল, ছোট মাছ ইত্যাদি খাওয়া যায়। চা, কফি, ধূমপান থেকে একেবারেই বিরত থাকতে হবে।
লেখক : পুষ্টিবিদ, শমরিতা হাসপাতাল লি.